ইসলাম ধর্ম

মুনাফিকের চারটি স্বভাব, পরিণতি জাহান্নাম

অশ্লীল বাক্যালাপ মুনাফিকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য: সতর্ক করলেন রাসুল (সা.)

ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: ইসলামের দৃষ্টিতে কপটতা বা মুনাফিকের স্বভাব অত্যন্ত ঘৃণিত। এই ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থেকে একজন মুমিনের সর্বদা সতর্ক থাকা অপরিহার্য। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে মুনাফিকের সেই চারটি মৌলিক স্বভাব সম্পর্কে বিশেষভাবে হুঁশিয়ার করে গেছেন।

সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, “চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকে, সে মুনাফিক। অথবা যার মধ্যে এর যেকোনো একটি স্বভাব থাকে, তার মধ্যেও মুনাফিকীর একটি স্বভাব থাকে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিত্যাগ করে।”

সহীহ বুখারীর ২৪৫৯ নম্বর হাদিসে বর্ণিত সেই চারটি স্বভাব হলো:
১. যখন সে কথা বলে, তখন মিথ্যা বলে।
২. যখন সে ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন তা ভঙ্গ করে।
৩. যখন সে চুক্তি বা অঙ্গীকার করে, তখন তা লঙ্ঘন করে।
৪. যখন সে ঝগড়া বা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে, তখন অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে। (এই হাদিস অনুসারে, অশ্লীল বাক্যালাপ মুনাফিকের অন্যতম লক্ষণ)।

মুনাফিকির ভয়াবহ পরিণাম

মুনাফিকদের দুনিয়ার এই স্বভাবগুলোর কারণেই তাদের পরকালীন পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ বলে পবিত্র কুরআনে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। মহান আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও নারীদের নিশ্চিত জাহান্নামবাসী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানে তাদের চিরকাল থাকতে হবে এবং কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা আন-নিসার ১৪৫ নম্বর আয়াতে কঠোর ভাষায় বলেছেন,
“নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী কখনও পাবে না।”

এছাড়াও, সূরা আত-তাওবার ৬৮ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে,
“মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটি তাদের জন্য যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের লা‘নত করেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।”

তাই শুধু এই জ্ঞান অর্জন করাই যথেষ্ট নয়, বরং প্রতিটি মুমিনকে এই হাদিস ও কুরআনের নির্দেশনাগুলো মেনে চলে মুনাফিকের স্বভাব থেকে দূরে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button