অপরাধএক্সক্লুসিভকক্সবাজারদুর্নীতিদেশপ্রশাসনবাংলাদেশসম্পাদকীয়

পতেঙ্গার কুখ্যাত গিট্টুবাজ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাসুদ করিম এখন অবস্থান করছেন কক্সবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সময় পতেঙ্গার চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের সদস্য মাসুদ করিম টাকার বিনিময়ে অর্জন করেছিলেন পতেঙ্গা ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতির পদ। পুলিশী তৎপরতার মুখে তিনি সম্প্রতি এলাকা ত্যাগ করে শ্বশুরবাড়ি কক্সবাজারে চলে যান। সেখানে গিয়েও তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেমে নেই।

গত ১০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাবকে ব্যবহার করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেছেন তিনি। জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত উপকূলে নির্মাণ করে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আউটার রিং রোড। সেই প্রকল্পের আওতায় সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো গাছপালা ও বাগান নষ্ট করে তৈরি করা হয়েছে ছয় শতাধিক দোকান।

‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হকার ক্যামেরাম্যান শ্রমজীবী সমবায় লিমিটেড’ নামের সমিতির ব্যানার ব্যবহার করে প্রতিদিন দোকানপ্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা চাঁদা তোলা হতো। অভিযোগ আছে, এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ করতেন সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ করিম, যিনি কুত্তা মাসুদ নামেও স-পরিচিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাসুদের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সৈকত ঘিরে দোকান বাণিজ্যের পাশাপাশি টানেল রোডে সমিতির ব্যানারে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড তৈরি করে প্রতিটি গাড়ি থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা নিতেন। প্রতিদিন প্রায় ৫০টি মাইক্রোবাস সেখানে যাতায়াত করত।

এছাড়া সৈকতের মূল পয়েন্ট থেকে বালুচরের দিকে নামার ওয়াকওয়েতে নৌকা, দোলনা ও আরও ১০–২০টি রাইড বসিয়ে প্রতিদিন প্রত্যেকটির কাছ থেকে ১,০০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হতো। এসব অবৈধ উপার্জন থেকে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং ভোগ-বিলাসী জীবনযাপন করেন।

এলাকার অনেকেই জানান, একসময়ের গরুর খামারের কর্মচারী থেকে তিনি এখন কোটিপতিতে পরিণত হয়েছেন। মাদকসেবী হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে; প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা মাদক সেবনে ব্যয় করেন বলে অভিযোগ।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি মাসুদ করিমকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাদের অভিযোগ—তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার, মারধর, হামলা, চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।

এলাকাবাসীর দাবি, বন্দর–পতেঙ্গার সাবেক এমপি লতিফের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে তিনি নিজস্ব সশস্ত্র দল গড়ে তোলেন এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন করেন। সরকারি জমি দখল, অবৈধ ব্যবসা এবং সাংবাদিক ও প্রশাসনকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তার বিরুদ্ধে থানায় ভাঙচুর, চাঁদাবাজি, মারধরসহ একাধিক মামলা হয়। কিছুদিন আগে গ্রেপ্তার হয়ে কাশেমপুর কারাগারে গেলেও মুক্তির পর তিনি আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

এলাকাবাসীর দাবি, এখনও কিছু অসাধু প্রশাসনিক ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ফলে গভীর রাতে নৌযানে করে চোরাই মালামাল আনা–নেওয়া অব্যাহত থাকলেও তা বন্ধ হচ্ছে না, এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগও রয়েছে।

একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী বলেন, “পতেঙ্গায় তার মতো প্রভাবশালী আর কেউ নেই। এলাকায় শান্তি ফেরাতে হলে তাকে দীর্ঘমেয়াদে আইনের আওতায় আনতে হবে।”

সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে এলাকায় বড় ধরনের অপরাধ বা সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তারা দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

তার অপরাধের যোগানদাতা ছ্যাঁচড়া নারী লোভী প্রতিবন্ধী বাইট্টা ইসমাইল ও ডাকার টোকাই টুরিস্ট ইনচার্জের পা-চাটা গোলাম নাছির ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button