শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ: আইন উপদেষ্টার ‘শোকর আলহামদুলিল্লাহ’

জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা; নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন।
এই রায় ঘোষণার পর অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা প্রফেসর আসিফ নজরুল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড। শোকর আলহামদুলিল্লাহ।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয় এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এটিই প্রথম মামলা, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হয়। গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হওয়ার দিনই এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
এই মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনও আসামি ছিলেন। তবে মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।
তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়, যার মধ্যে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখাঁরপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
মামলায় মোট ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট এবং ৮ অক্টোবর মূল তদন্ত কর্মকর্তার জেরার মাধ্যমে তা শেষ হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ঠিক করা হয়, এবং সেদিন ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।
শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেন কোনো ধরনের নাশকতা চালাতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রবিবার থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “যারা মানুষ ও পুলিশ সদস্যদের ওপর ককটেল হামলা ও যানবাহনে আগুন দেবে, আইনসম্মতভাবেই তাদের ওপর গুলির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”



