সন্তান নামাজ না পড়লে মা-বাবার গুনাহ হবে কি না—ইসলামী বিধান
ইসলামি বিচিত্রা ডেস্ক: অনেক ধর্মপ্রাণ বাবা-মা দুশ্চিন্তায় ভোগেন এই ভেবে যে, তারা বলার পরেও যদি সন্তান নামাজ না পড়ে, তবে এর দায়ভার বা গুনাহ তাদের ওপর বর্তাবে কি না। ইসলামি শরিয়তে এ বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।
বিশিষ্ট ইসলামি আলোচক শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল এ বিষয়ে ফতোয়া প্রদান করেছেন। তার মতে, ইসলাম বাবা-মায়ের ওপর এই দায়িত্ব অর্পণ করেছে যে, তারা যেন সন্তানকে সাত বছর বয়স থেকেই নামাজের আদেশ দেন। আর বয়স দশ বছর হলে নামাজের জন্য প্রয়োজনে মৃদু শাসন বা প্রহার করার নির্দেশও হাদিসে রয়েছে। যেসব অভিভাবক শৈশব থেকেই সন্তানকে এভাবে নামাজের অভ্যাসে গড়ে তোলেন, আশা করা যায় তাদের সন্তানরা ভবিষ্যতে নামাজ বিমুখ হবে না।
প্রতিটি মুসলমান বাবা-মায়ের ওপর ফরজ দায়িত্ব হলো সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া এবং ইসলামি জীবনাচারে অভ্যস্ত করা। অভিভাবক যদি তাদের এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন এবং এরপরও সন্তান বড় হয়ে বেনামাজি হয় বা ইসলামবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়, তবে ওই পাপের দায়ভার একান্তই সন্তানের। এ ক্ষেত্রে বাবা-মা গুনাহগার হবেন না।
তবে, বাবা-মা যদি শুরু থেকেই সন্তানের দ্বীনি শিক্ষার ব্যাপারে উদাসীন থাকেন এবং তাদের অবহেলার কারণেই সন্তান বেনামাজি হয়ে বেড়ে ওঠে, তবে এই গুনাহ থেকে বাবা-মা ও সন্তান—কেউই রেহাই পাবেন না।
অনেকের ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায় যে, বাবা-মা জীবনের প্রথম দিকে হয়তো ইসলাম পালনে সচেতন ছিলেন না, ফলে সন্তানদেরও সেভাবে গড়ে তোলেননি। কিন্তু পরবর্তীতে তারা তওবা করে নিজেদের সংশোধন করেছেন এবং দ্বীনের পথে ফিরে এসেছেন। এমতাবস্থায় করণীয় হলো—সন্তানদেরও তওবা করে ইসলামের পথে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া।
বাবা-মায়ের বর্তমান নির্দেশ ও তাগিদ দেওয়ার পরেও যদি প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানরা নামাজ না পড়ে বা ইসলাম না মানে, তবে বাবা-মা তাদের দায়িত্ব পালনের কারণে আল্লাহর কাছে গুনাহমুক্ত থাকবেন। কিন্তু সন্তানরা তাদের অবাধ্যতা ও আমলহীনতার জন্য আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।



