রাজনৈতিক প্রভাব ও অঢেল সম্পদ: বিতর্কের মুখে ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার: রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে গত এক দশকে অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও জনতা ট্র্যাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। আসন্ন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিয়ে ক্রীড়াঙ্গন ও ব্যবসায়ী মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগীদের দাবি, রাজনৈতিক ছত্রছায়াকে পুঁজি করেই তিনি আজকের এই অবস্থানে পৌঁছেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিগত এক দশকে আমজাদ হোসেনের সম্পদ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়দের মতে, তার এই হঠাৎ উত্থান স্বাভাবিক ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ায় হয়নি। বরং ক্ষমতাসীন মহলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে তিনি নানা অনিয়ম ও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক অনিয়ম ও অস্বচ্ছ লেনদেনের অভিযোগগুলো কখনোই সুষ্ঠু তদন্তের আওতায় আসেনি।
ব্যবসায়ী মহলে চাউর আছে যে, আমজাদ হোসেন নিজের পারিবারিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করেছেন। তার বাবা মোহাম্মদ আকরাম হোসেন ১৯৯০-৯২ মেয়াদে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন। বাবার সেই প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিভিন্ন সেক্টরে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কেবল আর্থিক অনিয়মই নয়, এই ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও প্রতারণার অভিযোগে এক তরুণী তার বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছিলেন। এমন স্পর্শকাতর মামলার আসামি হয়েও প্রভাব খাটিয়ে তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বর্তমানে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) ২০২৫ সালের নির্বাচন। নানা বিতর্ক, মামলা ও অনিয়মের অভিযোগ মাথায় নিয়েও আমজাদ হোসেন বিওএ-এর উপ-মহাসচিব পদে প্রার্থী হয়েছেন।
স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক ও সচেতন মহলের প্রশ্ন—যার সম্পদের উৎস প্রশ্নবিদ্ধ এবং যার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তিনি কীভাবে জাতীয় ক্রীড়া প্রশাসনের এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পান? তাদের মতে, অদৃশ্য শক্তির ইশারা ছাড়া এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী মহল দাবি করছে, এখনই সময় আমজাদ হোসেনের সম্পদের উৎস এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তাকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমজাদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
(চলবে… বিস্তারিত আগামী পর্বে)



