অপরাধআইন ও বিচারচট্টগ্রামপ্রশাসনমিডিয়া

রাউজান ও সাতকানিয়ায় যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি বিপুল অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের রাউজান ও সাতকানিয়া উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পৃথক ও যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি এবং ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অভিযানে হত্যা ও ডাকাতি মামলার আসামিসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত থেকে বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলা পুলিশ, র‍্যাব-৭, নৌ-পুলিশ ও ৯ এপিবিএন-এর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ টিম এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

জেলা পুলিশ জানায়, রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া, বাগোয়ান, পূর্ব ও পশ্চিম গুজরা, সুলতানপুর, কদলপুর, রাউজান ইউনিয়ন এবং পৌরসভা এলাকায় পুলিশ, র‍্যাব ও এপিবিএনের একাধিক টিম একযোগে অভিযান চালায়। একই সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয় ১৭টি চেকপোস্ট।

অভিযানে জেলা পুলিশ উদ্ধার করে ৮টি এলজি, ৬ রাউন্ড কার্তুজ, ১৪টি ছোরা, ৩টি রামদা, ২টি চাপাতি, ২টি তলোয়ার, ১টি কিরিচ ও ১টি ইলেক্ট্রিক কাটার। অন্যদিকে র‍্যাব-৭ এর টিম উদ্ধার করে ৩টি এলজি, ২টি তলোয়ার ও ১টি কিরিচ।

চেকপোস্টে তল্লাশিকালে ২৮টি মোটরসাইকেল ও ১টি ট্রাক আটক করা হয়। মোটরযান আইনে ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

একই রাতে সাতকানিয়া থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মো. তারেক ও মো. মিনারুল আলমকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ২টি শর্টগানের কার্তুজ, ১টি লোহার স্টিক ও ৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত তারেকের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৪টি মামলা রয়েছে। এছাড়া পৃথক অভিযানে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য ও ৩ মামলার আসামি আয়ুবকেও গ্রেপ্তার করে সাতকানিয়া থানা পুলিশ।

রাউজানের চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী হাকিম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

হাকিম হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশ উদ্ধার করেছে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ১টি চায়না রাইফেল, ১টি শর্টগান, ২টি এলজি, ৪৯ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১৭ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১৯ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৭টি ম্যাগাজিন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল।

চলতি বছরের নভেম্বর মাসে শুধু রাউজান থানা এলাকা থেকেই ২৪টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৫ রাউন্ড গুলি ও ৩২টি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সংক্রান্তে ১০টি মামলা হয়েছে এবং ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও ১৭টি থানা অভিযান চালিয়ে মোট ৫৭৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৬২টি গুলি ও ২০৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে। এ সময় অস্ত্র আইনে ৯৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ১৪০ জন অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button