জাতীয়সংগঠন

জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশেনের চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ এর আহবান যাকাতের সর্বোত্তম ব্যবহারে অসহায়দের মুক্তি

আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে আপনার যাকাতের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে অসহায় ভুখা নাঙ্গা গৃহহীন, এতিম, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের যাকাত প্রদানের মাধ্যমে ইসলামের গুরুত্বপূর্ন বিধানের জন্য আপনার দানের হাত বাড়িয়ে দিন।

ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে যাকাত প্রদান কর। হাদিছ শরীফে আছে অযযাকাতুল কান্তারাতুল ইসলাম, অর্থাৎ যাকাত হচ্ছে ইসলামের সেতু (কান্তারা শব্দের অর্থ হচ্ছে সেতু)। মহান আল্লাহকে সন্তষ্ট করার জন্য যাকাত নামক সেতু পার হয়ে আমরা ইসলামের পতাকা শক্ত করে ধরতে চাই। মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কুরআনে বহু জায়গায় সালাত ও যাকাত বার বার গুরুত্ব সহকারে বাস্তবায়নের নির্দেশ এসেছে। বলা হয়েছে, কায়েম করো নামাজ, দাও যাকাত। এ যাকাত সম্পর্কে  আমাদের অধিকাংশেরই সঠিক জ্ঞান না থাকায় আমরা সঠিকভাবে যাকাত আদায় ও এর ব্যবহার করতে পারছি না। ফলে আল্লাহর নির্দেশিত ফরজ এ বিধান ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় উপেক্ষিত হয়ে যাচ্ছে বা আমরা সঠিকভাবে পালন করতে পারছিনা না। জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে আমরা যাকাত আদায়ের মাধ্যমে আমরা অসহায় এতিম মিসকিনদের সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি। ইসলামী জ্ঞানে যারা পরিপক্ক তাদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি সম্পদশালীরা ঠিকমত যাকাত প্রদান করলে এবং সেই যাকাত সঠিকভাবে বন্টন হলে দেশে কোন দারিদ্রতা আর থাকবে না। আর দারিদ্রতা না থাকার মানে হচ্ছে দেশে বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় কোন অন্যায়, জুলুম ও অনাচার থাকবে না। এর ফলে গোটা দেশটিই একটি শান্তির ভান্ডার হয়ে ওঠবে এবং যেখানে শান্তি বিরাজ করবে সেখানে আমারা কোন প্রকার প্রতিকুলতা ছাড়াই খাস দিলে মহান আল্লাহ’র ইবাদত ও তাবেদারি করে আখিরাতে সৃষ্টিকর্তার আরশের নিচে অবস্থান করতে পারবো। হাশরের বিচারের কঠিন দিনে মহান আল্লাহ’র আরশের শীতল ছায়ার নিচে অবস্থান করবে তারা কতইনা ভাগ্যবান। সেই ফরজ বিধান যাকাত এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে দেশে দারিদ্র সীমার নিচে অবস্থান করা ব্যাক্তিদের/পরিবারের দারিদ্রতা নিরসন ও মিথ্যা মামলায় জেলে বন্দী থাকা অসহায়দের মুক্তি, সুচিকিৎসা নিশ্চিতায়ন ও ইসলামী মূল্যবোধের শিক্ষায় শিক্ষিত জাতি গঠন করা সম্ভব হবে। ফলে সমাজে জামিতিক হারে বৃদ্ধি পাওয়া অনৈতিকতা ও অপরাধ কমে যাবে, দেশ হবে এক নিরাপদ বাসস্থান।

জাকাত ইসলাম ধর্মের মুল ৫টি স্তম্ভের একটি স্তম্ভ। কাজেই যাকাত প্রদানে মহান আল্লাহ তালার নির্দ্দেশিত বিধানের বাহিরে মানুষের ইচ্ছায় রদবদলের কোন সুযোগ নাই, যাকাত প্রদানের ৮ টি শর্ত আছে। শুধু মাত্র সেই মোতাবেক যাকাত প্রদান করলেই ব্যাক্তির যাকাত হইবে। যাকাত দাতা ও গ্রহিতাকে পরিপূর্ন সহযোগিতা করতে হবে তবে আংশিক করা যাবেনা। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিগত বিগত ১৬ বছর যাবৎ জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে একটি যাকাত ফান্ড করে, দান অনুদান নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সমাজের সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত বিষয় হচ্ছে সারাদেশের প্রায় সব জেল খানায় অসহায় ব্যাক্তি অর্থাভাবে বিনা বিচারে  বছরের পর বছর জেল খেটে যাচ্ছে, অনেকেই আবার অর্থাভাবে তার আইনগত অধিকার আদায়ের জন্য মামলা করতে পারছেনা। অথচ প্রতি বছরই সারাদেশে ধনী ব্যক্তিগন কম বেশী যাকাত আদান-প্রদান করে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় সবচেয়ে বেশী উপেক্ষিত বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মহান আল্লাহর পবিত্র এ বিধানটি যথাযথভাবে মেনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিমূলক শুষ্ঠু যাকাত ব্যবস্থাপনার মাধমে এ সংকট সমাধান করা সম্ভব। তাই এ লক্ষ অর্জনে দেশের হতদরিদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠীকে তথা এই বাংলাদেশের অর্থাভাবে আইনগত অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার রক্ষায়, জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন আগের চেয়ে আরো ব্যপকভাবে দেশব্যাপি যাকাত ব্যবস্থা বাস্তবায়নের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এ মহৎ কার্যটি আমরা কয়েকজন উদ্দোগ গ্রহণ করলেও আমাদের একার পক্ষে বস্তুত এ কার্যক্রম দেশব্যাপী ব্যবস্থাপনা করে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

অতএব আমাদের যাকাত প্রদানকারী বাক্তিগন তথা পেশাজিবি, বুদ্ধিজীবি, সমাজ সেবক, রাজণীতিবিদ,ইসলামী স্কলার, আইনজিবী এবং ওলামায়ে কেরামগন সহ সমাজের সর্বস্তরের ব্যাক্তিগনের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আসুন দেশের আইন মেনে নিবন্ধনকৃত এ সংঠনটির শুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিটা জেলায় আইনি বঞ্চিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা সমাজের সর্বস্তরের সকলেই যার যার সাধ্যমত এগিয়ে আসি এবং আমাদের সকলের যাকাত, দান অনুদান এ প্রতিষ্ঠানে প্রদান করি। শুধু যাকাত প্রদান করলেই হবে না, এই প্রতিষ্ঠানটির মহৎ উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে সকলকে অবহিত করি।

মহান আল্লাহ তায়ালার ফরজ বিধান যাকাত আদান-প্রদান ও শুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যাকাতের মাধ্যমে অসহায় ব্যাক্তিদের আইনি অধিকার বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াই। যাকাতের বিধান সম্পর্কে আমরা নিজেদের সচেতন করি এবং অন্যদেরও সচেতন করে যাকাত প্রদান করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করি। প্রতিটি মুসলিমকে মনে রাখতে হবে আল্লাহ’র নৈকট্য যিনি অর্জন করতে পারবেন, তার ইহজগৎ ও পরজগৎ কোথাও কোন ভয় নেই। আপনারা যারা সহযোগিতা করবেন তারা ৪ ভাবে সহযোগিতা করতে পারেন। ১. নগদ টাকা দিয়ে। ২. যার সামর্থ নেই তিনি শ্রম দিয়ে সাহায্য করবেন। ৩. যিনি শ্রম দিয়েও সাহায্য করতে পারবেন না তিনি বন্ধু বান্ধব, আত্বীয় স্বজন, পরিচিত বিত্তবানদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সহযোগিতা করতে পারেন। ৪.যাদের উপরোক্ত কোন সামর্থ্য নেই তিনি অন্ততপক্ষে দোয়া করে হলেও সহযোগিতা করতে পারেন। পরিশেষে সকলের দান অনুদান এবং যাকাত প্রদান করার  মন মানসিকতার, আল্লাহতাআলা যেন তাওফিক দেন-আমিন।

এস এম মোরশেদ

চেয়ারম্যান

৭৮ মতিঝিল ৭ম তলা

০১৯১১-৩৮৫৯৭০ (বিকাশ/নগদ)

জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button