অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: সিলেটে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানিতে পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগের জবাবে এক সরস অথচ ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন দুদক কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবর আজিজী। তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘একজন ভালো এসআই (উপপরিদর্শক) নিয়োগ দিন, যিনি একটু কম খান।’’ তার এই মন্তব্যের পরপরই উপস্থিত ভুক্তভোগী ও সাধারণ জনতা করতালির মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানান।
রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারে অবস্থিত কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানি চলাকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতি ও হয়রানির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তোলেন এক ভুক্তভোগী। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানকে মঞ্চে ডেকে ভুক্তভোগীর মুখোমুখি করা হয়।
আত্মপক্ষ সমর্থনে ওসি জানান, তিনি থানায় নতুন যোগদান করেছেন এবং অভিযোগের বিষয়টি তার দায়িত্ব নেওয়ার আগের ঘটনা। তবে তিনি ভুক্তভোগীকে ন্যায়বিচার ও সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন। ওসির এই আশ্বাসের জবাবেই দুদক কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবর আজিজী ওই মন্তব্য করেন। তার এই মন্তব্যে পুলিশি সেবায় ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রচ্ছন্নভাবে উঠে আসে।
দুদকের এই গণশুনানিতে সিলেটের মোট ২৮টি সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে মোট ৭৩টি অভিযোগের শুনানি হয়। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দুদক তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কিছু বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
শুনানিতে পুলিশ ছাড়াও হিসাব রক্ষণ অফিস, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, রেলওয়ে, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস, জালালাবাদ গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে গ্রাহক ও সেবাপ্রত্যাশীরা বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন। দুদক কর্মকর্তারা এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা–উন–নবী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মু. মাসুদ রানা এবং সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।



