অপরাধএক্সক্লুসিভচট্টগ্রামচট্টগ্রাম বিভাগদুর্নীতিবাংলাদেশবিভাগ

চসিকের প্রকৌশলী দম্পতির অস্ট্রেলিয়ায় সম্পদের পাহাড়, অভিযোগ অনিয়মের

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রকৌশল বিভাগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সিভিল বিভাগের অঞ্চল–৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। একাধিক সূত্রের দাবি—দীর্ঘদিন ধরে প্রকৌশল বিভাগে প্রভাব বিস্তার ও অনিয়মে জড়িয়ে তারা উল্লেখযোগ্য সম্পদ গড়ে তুলেছেন।অভিযোগে বলা হয়, শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী চসিকের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলামের সুপারিশে দৈনিক বেতনের ভিত্তিতে বিল্ডিং সুপারভাইজার হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরে তিনি অস্থায়ী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি এক অফিস আদেশে তাকে সহকারী প্রকৌশলী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে উন্নীত করা হয়। শিক্ষানবিশ অবস্থান থেকে দ্রুত অগ্রগতির মাধ্যমে তিনি ২০২৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থেকে দুই ধাপ উপরে উঠে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পান—যা নিয়ে সহকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে।ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালে নগরের সড়ক বাতি বন্ধ রাখার ঘটনায় তিনি বিতর্কে জড়ান। পরবর্তীতে তাকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে বদলি করা হলেও সেখানে দায়িত্ব পালনকালে তিনি পদোন্নতি পান। সহকর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও অতীতে তার বিরুদ্ধে উঠেছিল। ২০১৭ সালে এক সংখ্যালঘু কর্মকর্তা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছেন—এমন অভিযোগে তাকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, যদিও পরে উচ্চ আদালতের আদেশে তিনি চাকরিতে ফিরে আসেন।অভিযোগ রয়েছে, শাহীন উল ইসলামের প্রভাবের কারণে তার স্ত্রী ফারজানা মুক্তা অস্থায়ী সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৩ সালে স্থায়ী না হয়েও তাকে ২৫০ কোটি টাকার ‘পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ’ প্রকল্পের পরিচালক করা হয়—যা সরকারি বিধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। সাধারণত প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেতে স্থায়ী কর্মকর্তা হওয়া বাধ্যতামূলক এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন হয়।দম্পতি পরবর্তীতে চসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বের ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, দম্পতির ঘোষিত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখ করা হয়— পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট, উচ্চমূল্যের ব্যক্তিগত গাড়ি, সন্তানদের ব্যয়বহুল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষা, বোয়ালখালী উপজেলায় বিপুল পরিমাণ জমি, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বেনামি ফ্ল্যাট ও প্লট এবং আত্মীয়ের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় সম্পদ ক্রয় ও অর্থ পাচারের অভিযোগ।এসব অভিযোগের কোনটি প্রতিষ্ঠানিকভাবে যাচাই হয়েছে কি না—তা জানা যায়নি। অভিযোগে আরও বলা হয়, চসিকের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এই দম্পতির অনিয়মকে সহযোগিতা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button