ফটিকছড়ির আলোচিত দুই ভাই হত্যা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: অভিযানে ধরা পড়লেন ওসমান গনি মানিকসহ পলাতক তিনজনচট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর আপন দুই ভাই হত্যা মামলার তিন সন্দিগ্ধ পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। গ্রেফতারদের মধ্যে মূল সন্দিগ্ধ পলাতক আসামি ওসমান গনি মানিকসহ আরও দুইজন রয়েছে।
পটভূমি: পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড
২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ফটিকছড়ি থানার ফতেহপুর গ্রামে মো. রাসেলের বসতবাড়িতে পারিবারিক বাকবিতণ্ডা থেকে ঘটে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। জানা যায়, রেজাউল করিম ও তার স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে চিৎকার করলে ১০০–১৫০ জন স্থানীয় মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে উপস্থিত জনতার সঙ্গে রেজাউল করিমের বাকবিতণ্ডা তীব্র আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রেজাউল করিমের পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এতে রেজাউলের আপন দুই ভাই—জাহাঙ্গীর এবং আলমগীর গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়।
এই ঘটনায় নিহতদের ছোট ভাই মো. রাসেল বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় মামলা নং-০৩, তারিখ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, জিআর–১৫৪/২৪, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোডে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১ জনকে নামীয় আসামি এবং ১০০–১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
র্যাব-৭ এর গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান
মামলার রহস্য উদ্ঘাটন এবং জড়িতদের শনাক্ত করতে র্যাব-৭ ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়—পলাতক আসামি ওসমান গনি মানিক হাটহাজারী এলাকায় অবস্থান করছে।
পরবর্তীতে ২৬ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দুপুর ১:৩৫ ঘটিকায় র্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দল হাটহাজারী থানার ফটিকা কামাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৫৮ বছর বয়সী ওসমান গনি মানিককে গ্রেফতার করে।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের আরেক দল হাটহাজারী থানার কড়িয়ার দিঘী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও দুই পলাতক আসামি— ১) মোঃ হারুন (৪০), পিতা মৃত নূরে আলম ২) আনোয়া পাশা বকুল (৬২), পিতা মৃত নোয়া মিয়া, উভয়েই ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা—কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত তিনজনকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।



