
নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই বিপ্লব ও বিপ্লবীদের নিয়ে কটূক্তি, বিভ্রান্তিকর মন্তব্য এবং রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন এবং মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র সমর্থক ও অনুসারীরা। তাদের অভিযোগ, এই দুই প্রবীণ আইনজীবী ‘মুজিববাদী ও ভারতীয় এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে লিপ্ত থেকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করার পাঁয়তারা করছেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন প্রচারণায় দলটির সমর্থকরা এই দাবি জানান। বিবৃতিতে ড. কামাল হোসেনকে ‘সংবিধানের নামে ক্যুর মাস্টারমাইন্ড’ এবং জেড আই খান পান্নাকে ‘উগ্র মুজিববাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ড. কামাল হোসেন ১৯৭০ সাল থেকেই দেশের স্বার্থবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাকে একাত্তরের ‘গণহত্যাকারী ও স্বাধীনতাবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, তিনি ১৬ বার সাংবিধানিক ক্যুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে হিন্দুত্ববাদী শাসনতন্ত্রের আদলে জিম্মি করে রেখেছিলেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ২০১৪ সালের দশম সংসদ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেন সেই রায়কে অবজ্ঞা করে ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দেন। একে তারা ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’ ও ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ হিসেবে উল্লেখ করে তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
বিবৃতিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে বিপ্লবীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার অভিযোগ আনা হয়। বলা হয়, চব্বিশের বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মাহিন সরকার ও আসিফ মাহমুদদের মতো ছাত্রনেতাদের আপসহীন নেতৃত্বে। অথচ জেড আই খান পান্না, ফজলুর রহমান এবং বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মির্জা ফখরুল, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও রুমিন ফারহানারা বিপ্লবীদের অবজ্ঞা করে পুনরায় পুরোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
জেড আই খান পান্নাকে ‘ভারতীয় দালাল’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে সাফাই গাইছেন এবং বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এতে দাবি করা হয়, শেখ মুজিব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোভে ৭০-এর নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন এবং ২৫ মার্চের গণহত্যার কথা আগে থেকে জানা সত্ত্বেও তিনি নিরাপদ ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পরিবার পাকিস্তানি বাহিনীর নিরাপত্তা হেফাজতে ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে জেড আই খান পান্না কার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা।
অবিলম্বে ড. কামাল হোসেন ও জেড আই খান পান্নাসহ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ও ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি জিন্দাবাদ’ স্লোগানের মাধ্যমে বিবৃতিটি শেষ করা হয়।



