আন্তর্জাতিকদেশবাংলাদেশবিশ্বসংগৃহীত সংবাদ

মাত্র তিন বছর বয়সে বই লিখে গিনেস বুকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সার্ভিয়ার বিশ্ব রেকর্ড

অনলাইন ডেস্ক: মাত্র তিন বছর বয়সে নিজের লেখা ও আঁকা বই প্রকাশ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান শিশু সার্ভিয়া হাসান। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নারী লেখক হিসেবে বই প্রকাশ করে সে নাম লিখিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। তার এই ঈর্ষণীয় সাফল্যে বিদেশের মাটিতে উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের নাম।

গিনেস কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ‘ইয়াংগেস্ট পারসন টু পাবলিশ আ বুক (ফিমেল)’ বা বই প্রকাশকারী সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি (নারী) ক্যাটাগরিতে এই বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে সার্ভিয়া। তার লেখা বইটির ইংরেজি সংস্করণের নাম ‘সার্ভিয়া অ্যান্ড হার লিটল ওয়ার্ল্ড’ (Sarvia and Her Little World) এবং বাংলা সংস্করণ ‘সার্ভিয়ার ছোট্ট পৃথিবী’। সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো, বইয়ের প্রতিটি গল্প লেখা এবং অলংকরণ বা ইলাস্ট্রেশনের কাজ এই খুদে শিশুটি নিজ হাতেই করেছে। তার অদম্য কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতার ছাপ রয়েছে বইয়ের পাতায় পাতায়।

সার্ভিয়ার এই যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না। সময়ের আগেই জন্ম নেওয়া (প্রি-ম্যাচিউর) শিশু হিসেবে তার বেড়ে ওঠা নিয়ে বাবা-মায়ের মনে ছিল গভীর উদ্বেগ। সমবয়সীদের তুলনায় সে পিছিয়ে পড়ে কি না, তা নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। কিন্তু পরিবারের নিবিড় পরিচর্যা ও উৎসাহে সব শারীরিক প্রতিকূলতা জয় করে সার্ভিয়া আজ সৃজনশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে ‘প্রতিভা প্রকাশ’ থেকে সার্ভিয়ার বইটি প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম আমাজনের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের পাঠকরা বইটি সংগ্রহ করতে পারছেন।

মেয়ের এমন অভাবনীয় সাফল্যে আবেগাপ্লুত সার্ভিয়ার বাবা মো. মেহেদী হাসান ও মা জারিন ফাইরোজ মুন। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তাঁরা বলেন, ‘বাবা-মা হিসেবে আমাদের খুব বিশাল কোনো প্রত্যাশা ছিল না। আমরা কেবল ওর জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, সেটাই করার চেষ্টা করেছি। তবে মেয়ে আজ যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল, তাতে আমাদের সব কষ্ট ও ত্যাগ সার্থক হয়েছে।’

প্রবাসে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য সার্ভিয়ার এই অর্জন অত্যন্ত গর্বের। এই খুদে গল্পকার প্রমাণ করেছে, সঠিক পরিবেশ ও সহযোগিতা পেলে যেকোনো শিশুই মেধার স্বাক্ষর রেখে বিশ্বজয় করতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button