Uncategorizedআইন ও বিচারজাতীয়দেশবাংলাদেশ

পিতার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল হওয়ায় কোটায় পাওয়া সন্তানদের সরকারি চাকরি নিয়ে আইনি জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা: কুমিল্লার লাকসামে এক ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের পর সেই সনদের সুবিধায় পাওয়া তার সন্তানদের সরকারি চাকরি বহাল থাকা নিয়ে দেখা দিয়েছে আইনি জটিলতা ও জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) কর্তৃক ওই ব্যক্তির সনদ বাতিল ঘোষিত হওয়ায় তার ছেলে ও মেয়ের চাকরির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাকসাম পৌরসভার বড়তুফা গ্রামের বলাগত উল্লাহর ছেলে মো. মনিরুল আনোয়ারের মুক্তিযোদ্ধা সনদটি সম্প্রতি বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭৮তম সভার ৩ নম্বর আলোচ্য সূচির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাচাই-বাছাই শেষে সারা দেশে মোট ৮১ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়। এই ৮১ জনের তালিকায় লাকসামের মনিরুল আনোয়ারের নামও রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বাতিলকৃত এই সনদ ব্যবহার করেই মনিরুল আনোয়ারের দুই সন্তান সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছিলেন। তার ছেলে রাশেদুল আনোয়ার বাঁধন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বাংলাদেশ রেলওয়েতে এবং মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে বর্তমানে কর্মরত। যেহেতু তাদের চাকরির ভিত্তি ছিল পিতার মুক্তিযোদ্ধা সনদ, আর বর্তমানে সেই সনদটিই রাষ্ট্র কর্তৃক বাতিল বলে গণ্য হয়েছে, তাই এই কোটায় পাওয়া তাদের চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহলে জোর আলোচনা চলছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মনিরুল আনোয়ারের ছেলে রাশেদুল আনোয়ার রেলওয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ হন। প্রার্থী বাছাই তালিকায় তার ক্রমিক নম্বর ছিল ৭৭, রোল নম্বর ২৮০২ এবং প্রাপ্ত ফলাফল ৬৪.৪। তিনি বর্তমানে বুকিং ক্লার্ক হিসেবে রেলওয়ের কসবা স্টেশনে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঘটনার পটভূমি সম্পর্কে জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রণালয় ও জামুকার কাছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। ওই অভিযোগে মনিরুল আনোয়ারসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত ও যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় লাকসামের চারজনের সনদ বাতিল করে জামুকা, যার মধ্যে মনিরুল আনোয়ার অন্যতম।

পিতার সনদ বাতিলের পর সন্তানদের চাকরি থাকবে কি না—এ বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মনিরুল আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button