মুহাম্মদ জুবাইর: গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসনের। চট্টগ্রাম নগরীর সাগরিকা বিসিক শিল্প এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা অবৈধ দখল ও চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট গুঁড়িয়ে দিতে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় চাকমার নেতৃত্বে শফি মোটরস এলাকায় এক বিশেষ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
সম্প্রতি ‘সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা’ পত্রিকায় সাগরিকা এলাকার সড়ক দখল ও চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে স্থানীয় ‘ডন’ খ্যাত রহিম এবং তার সহযোগী মামুন ও ইলিয়াসের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এক ত্রাসের রাজত্বের চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গ্যারেজ, স্ট্যান্ড ও শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে দৈনিক লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায়, মাদক ব্যবসা এবং শ্রমিক নির্যাতনের মাধ্যমে এলাকাটি অপরাধের দুর্গে পরিণত হয়েছিল।

এই সংবাদের প্রেক্ষিতেই সোমবারের অভিযানটি পরিচালিত হয়। অভিযানে বিসিক এলাকার সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক ও লরিগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা চারটি পণ্যবাহী গাড়ি জব্দ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় চাকমা বলেন, “সড়ক দখল করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয়রা জানান, রহিম-মামুন-ইলিয়াস সিন্ডিকেটের ভয়ে এতোদিন কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। দিনদুপুরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং মাদকের আড্ডায় সাগরিকা শিল্প এলাকাটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল। চসিকের এই অভিযানকে স্বাগত জানালেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এটি যেন লোক দেখানো একদিনের অভিযান না হয়। এলাকাটি স্থায়ীভাবে অপরাধমুক্ত করতে নিয়মিত পুলিশি টহল ও প্রশাসনিক নজরদারি প্রয়োজন।



