মুহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের ঐতিহ্যবাহী প্যারেড মাঠ শিগগিরই ফিরছে নতুন রূপে। এই ঐতিহাসিক মাঠটিকে আধুনিক গ্যালারি, ওয়াকওয়ে এবং উন্নত সুযোগ-সুবিধাসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ক্রীড়াক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর ২০২৫) চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আয়োজিত ‘আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
শৈশবের স্মৃতিচারণ করে মেয়র বলেন, ‘‘এই প্যারেড মাঠেই আমি ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। তাই এই মাঠের উন্নয়ন করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। শুধু প্যারেড মাঠ নয়, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ৪১টি খেলার মাঠ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।’’ তিনি জানান, ইতোমধ্যে বাকলিয়া স্কুল মাঠ, মহসিন কলেজ মাঠ, ফিরোজশাহ মাঠ, জাম্বুরি মাঠ ও হালিশহর বিডিআর মাঠসহ বেশ কয়েকটি মাঠের সংস্কারকাজ চলমান রয়েছে।
সমাজে কিশোর গ্যাং কালচার রোধে খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরে ডা. শাহাদাত বলেন, ‘‘গত দেড় দশকে কিশোর গ্যাং একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। তরুণদের এই অন্ধকার পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে খেলার মাঠের কোনো বিকল্প নেই। সুস্থ দেহ ও সুস্থ মন গঠনে মাঠভিত্তিক কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে।’’
এ সময় মেয়র নগরবাসীকে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, যত্রতত্র প্লাস্টিক ও পলিথিন ফেলার কারণে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ে। একটি পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর চট্টগ্রাম গড়তে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, সরকারি মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বেনু আরা বেগম, সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু সালেহ মো. নঈমুদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদগণ।
এর আগে সকালে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর ড. এ কে এম সামছু উদ্দিন আজাদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম।
পাঁচ জেলার ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে মুখর এই আয়োজনের সমাপনীতে মেয়র বলেন, প্যারেড মাঠের আধুনিকায়ন শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বড় বিনিয়োগ।



