অপরাধঅব্যাবস্থাপনাএক্সক্লুসিভবরিশালবরিশাল বিভাগবাংলাদেশবিভাগশিক্ষা

বরগুনায় পরীক্ষা নিলে থুথু দিবস পলনের হুমকি সহকারী শিক্ষক লিটনের

বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনা সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সমাজে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে একটি ভিডিও বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ উঠেছে, সহকারী শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটন প্রধান শিক্ষকদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য, বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা এবং বার্ষিক পরীক্ষা নিলে ‘থুথু দিবস’ পালনের হুমকি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) আবু জাফর মো. ছালেহ। ঘটনাটি নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেয়েছি।

জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর বরগুনা সদর উপজেলার ৩৬ জন প্রধান শিক্ষক লিখিত ও স্বাক্ষরিত অভিযোগ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট দাখিল করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ১ ডিসেম্বর উপজেলা শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের উপস্থিতিতে লিটন প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে হুমকি ও কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড-১১ বাস্তবায়ন আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব না নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের ঘোষণা দেন এবং দায়িত্ব পালন করলে “মুখে থুথু দেব” বলেও মন্তব্য করেন।

ফুলঝুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহাতাব হোসেন বলেন, এ ধরনের মন্তব্য শুধু অসম্মানজনকই নয়, বরং বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষক শিক্ষকের পারস্পরিক সম্পর্ককে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

বরগুনা সদর পশ্চিম মনসাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার বলেন, লিটন আমাদের সহকর্মী ও ছোট ভাই। তার কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি উল্টো আমাদের হুমকি ও কটূক্তি করছেন এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

বরগুনা সদর খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামসুন্নাহার মুনমুন বলেন, আমরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেই হবে। পরীক্ষা না নিলে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হতেন। কিন্তু একজন সহকারী শিক্ষক এভাবে হুমকি দিতে পারে না। আমরা কোনো অপকর্মে লিপ্ত নই। লিটনের দেওয়া কটূক্তি ও হুমকির সঠিক বিচার না হলে আমাদের মান সম্মান নিয়ে দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ভিডিও বিকৃত করে আমাকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। শিক্ষক সমিতির দুর্নীতির বিষয়ে আমি আগেও কথা বলেছি। সেই জায়গা থেকেই কিছু গ্রুপ আমাকে টার্গেট করেছে। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।

ডিপিও আবু জাফর মো. ছালেহ বলেন, ভিডিও ক্লিপটি আমি দেখেছি। একজন শিক্ষকের এমন আচরণে পুরা শিক্ষক সমাজে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ৩৬ জন প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button