
মুহাম্মদ জুবাইর
চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মজ্জারটেক শিকলবাহা এলাকায় অবৈধভাবে নকল সাবান উৎপাদনের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালিয়েছে র্যাব ৭ চট্টগ্রাম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপুল পরিমাণ নকল সাবান ও সাবান তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অবৈধ কারখানাটি তাৎক্ষণিকভাবে সিলগালা করা হয়। র্যাব জানায় নকল পণ্যের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও স্বাস্থ্যহানির মতো গুরুতর অপরাধ রুখতে এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
র্যাব ৭ চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে কর্ণফুলী থানাধীন মজ্জারটেক শিকলবাহা এলাকায় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নকল সাবান উৎপাদন করে আসছে। এই নকল সাবানগুলো নামি দামি ব্র্যান্ডের মোড়কে বাজারজাত করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে এসব নকল সাবান ব্যবহারে ত্বকের নানা রোগসহ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে সকাল আনুমানিক ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত র্যাব ৭ চট্টগ্রাম র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিএসটিআই প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি বিশেষ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মজ্জারটেক শিকলবাহা এলাকায় অবস্থিত ওই অবৈধ নকল সাবান উৎপাদন কারখানায়।
অভিযান চলাকালে কারখানার ভেতর থেকে বিভিন্ন পরিচিত ব্র্যান্ডের নামে তৈরি বিপুল পরিমাণ নকল সাবান উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি সাবান তৈরির কাঁচামাল ছাঁচ প্যাকেট মোড়ক ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। র্যাব জানায় এসব পণ্য কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই সম্পূর্ণ অবৈধভাবে উৎপাদন করা হচ্ছিল। বিএসটিআইয়ের কোনো মাননিয়ন্ত্রণ সনদ না থাকায় এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি ছিল।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ আবু হাসান। বিএসটিআইয়ের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পরিদর্শক আব্দুর রহিম। তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে র্যাব ৭ চট্টগ্রামের একটি চৌকস দল অভিযানটি সফলভাবে সম্পন্ন করে। অভিযান শেষে অবৈধ নকল সাবান উৎপাদনকারী কারখানাটি সিলগালা করা হয়।
র্যাব সূত্র জানায় উদ্ধারকৃত নকল সাবান ও উৎপাদন সরঞ্জামাদি বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের অবৈধ কারখানা ও নকল পণ্য উৎপাদন রোধে র্যাব ৭ চট্টগ্রাম এবং র্যাব সদর দপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয় নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ শুধু অর্থনৈতিক অপরাধ নয় এটি জনস্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি আঘাত। সাধারণ মানুষ যেন প্রতারিত না হন এবং স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়েন সে জন্য এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।



