আইন-শৃঙ্খলাঢাকা

সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করছে খবর পেয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন এসআই আনোয়ার

মাহবুব আলম মানিক

আশুলিয়া থানায় এক গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কোন প্রকার  জিডি, মামলা ছাড়াই  আসামিকে থানায় আটকে রেখে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের অনুসন্ধান শুরু হওয়ার খবরে সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক পিপিএম  (এসআই) আনোয়ার হোসেন।

ভুক্তভোগী ও একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি একটি ব্যাটারী চালিত রিকশা চুরির  সূত্র ধরে গ্যারেজ মালিক সুজন ও রিকশা চালক গফুর নামের দুইজন ব্যক্তিকে আশুলিয়া থানায় নিয়ে আসা হয় এবং আনুমানিক চার ঘন্টা থানা হাজতে আটকে রেখে মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করা হয়। দর কষাকষির একপর্যায়ে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয় এবং ওই দুই ব্যক্তিকে হাজত মুক্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়। বলে অভিযোগ রয়েছে ।

তবে বিষয়টি গোপন না থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে। কয়েকজন সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহে নামলে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম উঠে এলে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। সাংবাদিকরা তথ্য যাচাই ও ভুক্তভোগীর বক্তব্য সংগ্রহ করছেন—এমন খবর পাওয়ার পর এসআই আনোয়ার তড়িঘড়ি করে ঘুষ হিসেবে নেওয়া পুরো টাকা লোক মাধ্যমে  ফেরত দেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে । টাকা ফেরৎ পাওয়ার এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ভুক্তভোগী গ্যারেজ মালিক সুজন ও রিকশা চালক গফুরের স্ত্রী। 

 ভুক্তভোগী গ্যারেজ মালিক সুজন বলেন,

“আমরা টাকা না দিলে আমাদের ছাড়ার কোনো কথা ছিল না। কিন্তু ছাড়ার পরে সাংবাদিকরা বিষয়টি জানছে শুনেই হঠাৎ করে টাকা ফেরত দেওয়া হয়। নইলে আজও সেই টাকা আর ফেরত পেতাম না।”

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন,

“বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।”

তবে প্রশ্ন উঠেছে—থানার ভেতরে একজন এসআই কীভাবে গ্রেফতার বাণিজ্যের  অভিযোগের মুখে পড়লেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ‘কিছুই জানেন না’ বলে দায় এড়িয়ে যান?

স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আশুলিয়া থানায় দীর্ঘদিন ধরেই জিডি, মামলা ও আসামি ছাড়ানোর নামে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারই তদন্তের আগেই বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।

এ ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। না হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও ক্ষুণ্ন হবে বলে মনে করছেন তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button