পৃথিবীর সন্তানদের প্রতি বাবা মায়ের এটুকুই প্রত্যাশা

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্কঃ ছোটবেলা থেকেই আমি মানুষটা একটু গরম হওয়াতে শীতকাল পছন্দ করি এবং এশার নামাজ পড়ে শীতের ঠান্ডায় রাতে হাটাহাটি করছিলাম, এমন সময় আপা ফোন করে বললো বাসায় আসতে।
বাসায় এসেই দেখি মা বুকে হার্টের স্থানে ব্যথায় ছটফট করে এবং ব্যথা শুরু হওয়াতে তখনই মা আপাকে দিয়ে ফোন করিয়াছে আমাকে খুঁজেছে দোয়া পড়ে বুকে ফু দিতে।
তখনই দ্রুত অযু করে আমার রুমে দুই রাকাআত নফল নামাজ পড়তে নামাজে দাঁড়িয়ে যাই এবং শেষ রাকাআতের শেষ সিজদায় রবের নিকট মায়ের প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে দোয়া করে নামাজ শেষ করে মায়ের রুমে চলে যাই।
রুমে গিয়ে মায়ের বুকের হার্টের স্থানে ডান হাত রেখে ৭ বার সুরা ফাতেহা, ১ বার আয়াতুল করসী, চার কুল সুরায় সুরা ইখলাস ৩ বার এবং সুরা তওবার শেষ আয়াত ৭ বার পড়ে দরূদে ইব্রাহীম ৩ বার পড়ে মায়ের বুকে ফু দিয়ে অবশেষে ২০ বার “হাসবুনাল্লাহু ওয়ানিই মাল ওয়াকিল” পড়ে ফু দেই রবের উপর ভরসা করে বিশ্বাসী হয়ে এবং এর কিছুক্ষণ পরে মা বললো বুকের ব্যথা কমতে শুরু করছে ; আলহামদুলিল্লাহ।
এদিকে আমি মায়ের পাশে বসে দোয়া পড়া অবস্থায় মা বাঁচবেনা ভেবে বড়ো ভাই এবং আপা মায়ের কাছে আমাদের সবার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলো এবং আপা মাকে কালেমা শরীফ পড়াতে থাকে, কিন্তু আমি ভয় না পেয়ে রবের উপর কঠিন বিশ্বাসী হয়ে ঠিকই দোয়া পড়ে মায়ের বুকে ফু দিতে থাকি।
আজকে দুপুরে অফিসের কাজ শেষ করে মায়ের রুমে গিয়ে শরীরের খবর জানতে চাওয়াতে মা বললো সুস্থ আছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
বাবাও পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার কিছু দিন আগে এশার নামাজ পড়ে মসজিদ বন্ধ করে বাসায় এসে আমাকে বললো: খলিল! নামাজে মুনাজাতে এই দোয়া পড়িস।
: রব্বির হামহুমা কামা রব্বায়ানী ছগিরো।
তখনও বাবাকে বললাম: আব্বা! আমিতো নামাজের মোনাজাতে সবসময় এই দোয়াই পড়ি।
রব নিশ্চয়ই বাবাকে জানিয়ে দিছে, বাবা যে আমাদের ছেড়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাবে, নতুবা কখনোতো এর আগে এভাবে দোয়া করতে বলেনি;
চলে যাবে বলেই দোয়ার প্রত্যাশা করে মনে করিয়ে দিলো😭
বি: দ্র: এখানে শিক্ষনীয় বিষয় হলো: নামাজ পড়ে বাবা মায়ের জন্য প্রতিটা সন্তানের দোয়া করাটা প্রথমে রবই কবুল করেন এবং মৃত্যুর পরে অন্ধকার কবরে থেকেও বাবা মায়েরা পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সন্তানদের নিকট দোয়ার আশায় থাকে এবং আমাদের মৃত্যুর পরেও আমাদের সন্তানরাও আমাদর জন্য দোয়া করবে, যদি আমরাও তাদেরকে ইসলামের পথে পরিচালিত করে সুশিক্ষা দিতে পারি।ইনশাআল্লাহ।
আর কঠিন বিপদে শুধু রবের উপর ভরসা করে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং শুধু রবের কাছেই যেকোনো কিছু চাইতে হবে।
রব ছাড়া, নবী, সাহাবী, পীর ওলী এবং মাজারে গিয়ে কিছু চাইলে কিন্তু রবের সাথে অন্যকে শিরিক করার সাথে সাথে নিজের সর্বনাশ নিজেই করলো।


