অপরাধএক্সক্লুসিভ

তার অপরাধের তালিকা লিখতে গেলে একজন ভাল লেখকেরও কয়েকদিন লাগবে।

এই সেই ওসি নিজাম। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে রাত ৩ টায় ঘুমন্ত অবস্থায় মেস থেকে আমাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায় আর মিডিয়ায় বলে আমরা নাকি সরকারি স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিলাম। থানায় আমরা মোট ১৭ জন তার মধ্যে আমরা ৫/৬ জন ছিলাম একাদশ এবং অষ্টম শ্রেণির। ওখানে আমাদের দায়িত্বশীল (হাবিব উল্লাহ মিজবাহ,MD Saimon) ভাইদের কি নির্যাতন করেছে তার বর্ণনা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।

রাত তিনটা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত একটা রুমে রাখা হয়। এরপর দুইজন পুলিশ এসে একজন একজন করে ডেকে নিয়ে যায়, কিছুক্ষণ পর যখন আমাদের ভাইয়েরা আসে তাদের চেহারা লাল, চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। তারা দাঁড়াতে পারতেছে না, কথাও বলতে পারতেছে না। আমি আমার দায়িত্বশীল( Rakibul Hasan) ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি করব? ভাই বলেন, দোয়া ইউনুস পড় আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। আতঙ্ক আর নির্যাতনের মধ্য দিয়ে সেই দিনগুলো অতিবাহিত করেছিলাম।

একজন ভাইকে ( আজাদ আশরাফ ) এই ওসি নেজাম থানায় নির্যাতন চালানোর পর শিবিরের অফিস আর মেস খুঁজে দেওয়ার জন্য ৩ ঘন্টা পর্যন্ত পুরা শহর ঘুরাই।

আমরা যারা ছোট ছিলাম আমাদের কয়েক জনকে ( MD Shakil,Amir Hossain,Sharif Hossain,Abdullah AL Fahad) ওসি নেজামের রুমে নিয়ে যাওয়া হয় তারপর আমাদেরকে মাটিতে শুয়ায়ে হাতের নিচে স্টাম্প দিয়ে এর উপর পুলেশকে দাড়াতে বলে এই সন্ত্রাসী নেজাম আর জিজ্ঞেস করে আমরা কে কোন দায়িত্বে আছি আর শিবিরের অফিস কোন কোন জায়গায়। এই স্টাম্পের চাপ এতটায় গভীর ছিল যে আমাদের মনে হচ্ছে যেন প্রাণটা বেরিয়ে যাচ্ছে। এই বুঝি হাতটা ভেঙে যাচ্ছে। এই স্টাম্পের চাপ পুরাটাই দেওয়া হয়েছিল হাতের উপর যার ফলে ৪/৫ দিন পর্যন্ত আমাদের ভাইয়েরা হাত দিয়ে ভাত খাওয়া তো দূরের কথা হাতটা মুষ্টিবদ্ধ পর্যন্ত করতে পারেনি। সেই দিন এই সন্ত্রাসী নেজাম আমাদের সাথে এমন আচরণ করেছিল যেন আমরা শত্রু দেশের কোন যুদ্ধ বন্দি। সে রাজকীয় চেয়ারে বসে আমাদের মাঠিতে রেখে শুধু নির্দেশ দিয়েছে নির্যাতন চালাবার।

এই সন্ত্রাসী ওসি নেজাম আওয়ামী শাসনামলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে বাড়িতে, কর্মস্থানে কোথায় শান্তিতে থাকতে দেয়নি। বিরোধী দলের লোকদের যেখানে পেয়েছে সেখান থেকে গ্রেফতার করে মামলা, রিমান্ড আর থানায় এনে চালিয়েছে অমানবিক নির্যাতন।

তার অপরাধের তালিকা লিখতে গেলে একজন ভাল লেখকেরও কয়েকদিন লাগবে।

ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button