দাকোপে সরকারি বই বিতরণে টাকা নেওয়ার অভিযোগ
শিপন খলিফা,দাকোপ প্রতিনিধিঃ
দাকোপে একই কর্মস্থলে ২৭ বছর থাকা নাইটগার্ড সামাদের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিতরণে টাকা নেওয়া, নারী কেলেংকারীসহ বিস্তর অভিযোগ।
খুলনার দাকোপে বিনামূল্যে বই বিতরনে সরকারী নির্দেশ উপেক্ষিত করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ ২৭ বছর একই কর্মস্থলে থাকা বেপরোয়া নাইটগার্ড সামাদের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, অনিয়ম, অসাদাচরণ ও নারী কেলেংকারীর বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নাইটগার্ড। অফিসের নিরাপত্তায় রাত্রীকালিন দায়িত্বে তাকে কখনো দেখা যায়না। কিন্তু দাকোপ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অলিখিত অফিস প্রধানের ভূমিকায় দেখা যায় নাইটগার্ড আঃ সামাদকে। নতুন বছরে বিনামূল্যে সরকারি বই বিতরণের কথা থাকলেও দাকোপের ৪৪টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৫টি মাদ্রাসা থেকে বই নিতে আসা দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে সামাদ আদায় করেছে ৩ থেকে ৫ শ’ টাকা করে। উক্ত টাকা নেওয়ার একাধীক ভিডিও ফুটেজ গনমাধ্যম কর্মিদের হাতে আসে। গত ৩১ (ডিসেম্বর) ২০২৪ এবং ৭ (জানুয়ারি) ২০২৫ বই বিতরণকালে সামাদ নিজে টাকা গ্রহন করছেন এমন দৃশ্য ভিডিওতে দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বই গ্রহনকারি অনেকেই বাধ্য হয়ে সামাদকে টাকা দিয়ে বই নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাইটগার্ড আঃ সামাদ বলেন, “আমাদের জনবল সংকটে অর্থের বিনিময়ে লোক নিয়ে কাজ করাতে হয়, যে কারনে নির্দিষ্ট অংক নয়, স্কুল কতৃপক্ষ খুশি হয়ে যা দিয়েছে সেটা নিয়েছি”। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাকোপের অনেক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নাইটগার্ড সামাদই আমাদের অলিখিত অফিসার। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সব নিয়ন্ত্রন তার হাতে। বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষক ট্রেনিং, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিও ভূক্ত হতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে সামাদকে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়। যে কোন নিয়োগে সামাদকে চাহিদামত টাকা দিতে হয়। সকল ফাইল এবং নামের তালিকার অলিখিত নিয়ন্ত্রন এই সামাদের হাতে। এমনকি সামাদ শিক্ষকদের সামান্যতম সম্মান না দিয়ে অসাদাচরণ করে থাকে। দাকোপে নতুন শিক্ষা অফিসার যোগদান করলেই তাকে বশে নিয়ে সামাদ দীর্ঘ ২৭ বছর একই কায়দায় অনিয়ম, দূর্নীতি ও অসাদাচরণ করতে করতে বর্তমানে চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এমন অভিযোগ তাদের। তার বিরুদ্ধে আছে নারী কেলেংকারীর একাধীক অভিযোগ। সদ্য এমপিওভুক্ত একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর এক নারী কর্মচারীর সাথে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা ব্যাপক আলোচনায় আসে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরিতোষ কুমার আউলিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্থ নেওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ কেউ করেনি। বিষয়টি প্রয়োজনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দীর্ঘ ২৭ বছর একই কর্মস্থলে থাকা এবং অফিসের বিভিন্ন কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, জনবল সংকটের কারনে তাকে দিয়ে অনেক কাজ করাতে হয়। অন্যান্য অভিযোগের বিষয় গুলি তিনি জানেন না বলে দাবী করেছেন।