রাজশাহী কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ

রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তাঁকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেন একদল শিক্ষার্থী। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে বোয়ালিয়া মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম আতিকুর রহমান। তিনি রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের আগে কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের বি-ব্লকে থাকতেন তিনি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে আতিকুর রহমান মুসলিম ছাত্রাবাসের সামনে একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে চিনতে পেরে ধরে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাঁকে ছাত্রাবাসের সামনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয় তাঁকে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আতিকুর মুসলিম ছাত্রাবাসের বি-ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন। তখন তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর নানা সময়ে নির্যাতন ও হয়রানি করেছিলেন। তাঁর মুঠোফোন ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনি এখনো নিয়মিত ছাত্রলীগের বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেন এবং সংগঠনটির বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন।

ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের শেষে আতিকুর রহমানকে রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের সামনে একটি গাছে বেঁধে রাখেন একদল শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ এসে তাঁকে নিয়ে যায়ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষার্থীরা আতিকুরকে আটকের পর সেখানে যান রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, জোহরের নামাজ শেষে জানতে পারেন শিক্ষার্থীরা একজনকে আটক করেছেন। ছাত্রলীগ তো নানা ধরনের হয়। তাই আতিক কেমন ছাত্রলীগ, এটা জানার জন্য আতিক যে ব্লকে থাকতেন, সেই ব্লকের শিক্ষার্থীদের ডেকে আনা হয়। শিক্ষার্থীরা তাঁকে দেখে নানা অভিযোগ দিতে থাকেন। পরে তিনি (মোশাররফ) নিজে আতিকের মুঠোফোন যাচাই করেন। এতে তিনি দেখেন সরকার পতনের পর ছাত্রলীগের বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেছেন আতিক। গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পোস্টও করেছেন। জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয় আছেন। এ ছাড়া কিছুদিন আগে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্তের সঙ্গেও হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেছেন। ছাত্ররা তাঁকে মারতে উদ্যত হয়েছিল। পরে তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে বলে জানান শিবির নেতা।
নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। বোয়ালিয়া থানায় গেলে ডিউটি অফিসার খাতামুন আম্বিয়া বলেন, বিকেল পৌনে চারটার দিকে পুলিশ আতিককে থানায় নিয়ে এসেছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ছাত্ররা একজনকে ধরে দিয়েছে। ওই শিক্ষার্থী এখন বোয়ালিয়া থানাতেই আছেন। তাঁর নামে কোনো মামলা আছে কি না, দেখা হবে। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।