ইসলাম ধর্ম

অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা মহাপাপ এই বিষয়ে কোরআনের তাফসীর :

4,আন্-নিসা,আয়াত নং: 93

وَ مَنْ یَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهٗ جَهَنَّمُ خٰلِدًا فِیْهَا وَ غَضِبَ اللّٰهُ عَلَیْهِ وَ لَعَنَهٗ وَ اَعَدَّ لَهٗ عَذَابًا عَظِیْمًا

আর যে ব্যক্তিজেনে বুঝে মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে চিরকাল থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গযব ও তাঁর লানত এবং আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

তাফসীর: :

   সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে মুসলমান সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কেউ মা'বুদ নেই এবং আমি তাঁর রাসূল, তার রক্ত হালাল নয়, কিন্তু তিনটির মধ্যে যে কোন একটি কারণে (হত্যা করা বৈধ)। (১) কাউকে হত্যা করা, (২) বিবাহিত অবস্থায় ব্যভিচার করা এবং (৩) ধর্ম ত্যাগ করে দল হতে বিচ্ছিন্ন হওয়া। এ তিনটি কাজ কারও দ্বারা সংঘটিত হলে প্রজাদের মধ্যে কারও তাকে হত্যা করার অধিকার নেই বরং এটা হচ্ছে ইমাম বা তাঁর প্রতিনিধির অধিকার।

   ★★★হাদীসে রয়েছে যে, আল্লাহ আ'আলার নিকট সারা জগতের পতন একজন মুসলমানের হত্যা অপেক্ষা হালকা।

  ★★★ হাদীসে রয়েছে যে, যদি সারা ভূপৃষ্ঠের ও আকাশের অধিবাসী একজন মুসলমানকে হত্যার কাজে একত্রিত হয় তবে আল্লাহ সকলকেই উল্টো মুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।

  ★★★ হাদীসে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে হত্যার ব্যাপারে অর্ধেক কথা দিয়েও সাহায্য করে, সে কিয়ামতের দিন ঐ অবস্থায় উঠবে যে, তার কপালে লিখা থাকবেঃ এ ব্যক্তি আল্লাহর করুণা হতে বঞ্চিত।(Tafsir Ibn Kathir) 

5,আল-মায়েদা,আয়াত নং: 32

مِنْ اَجْلِ ذٰلِكَ١ؔۛۚ كَتَبْنَا عَلٰى بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اَنَّهٗ مَنْ قَتَلَ نَفْسًۢا بِغَیْرِ نَفْسٍ اَوْ فَسَادٍ فِی الْاَرْضِ فَكَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیْعًا١ؕ وَ مَنْ اَحْیَاهَا فَكَاَنَّمَاۤ اَحْیَا النَّاسَ جَمِیْعًا١ؕ وَ لَقَدْ جَآءَتْهُمْ رُسُلُنَا بِالْبَیِّنٰتِ١٘ ثُمَّ اِنَّ كَثِیْرًا مِّنْهُمْ بَعْدَ ذٰلِكَ فِی الْاَرْضِ لَمُسْرِفُوْنَ

এ কারণেই বনী ইসরাঈলের জন্য আমি এ ফরমান লিখে দিয়েছিলাম, “নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কোন কারণে যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলো সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে হত্যা করলো। আর যে ব্যক্তি কারো জীবন রক্ষা করলো সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করলো। কিন্তু তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, রসূলগণ একের পর এক সুস্পষ্ট হেদায়াত নিয়ে তাদের কাছে এলো, তারপরও তাদের বিপুল সংখ্যক লোক পৃথিবীতে সীমালংঘনকারীই থেকে গেলো।

           আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আদমের এ ছেলের অন্যায়ভাবে তার ভাইকে হত্যার কারণে আমি বানী ইসরাঈলকে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি, তাদের কিতাবে লিখে দিয়েছি এবং তাদের শরঈ হুকুম করে দিয়েছি যে, যে ব্যক্তি কাউকে বিনা কারণে হত্যা করে ফেললো, না সে নিহত ব্যক্তি কাউকে হত্যা করেছিল, না সে ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি ছড়িয়ে দিয়েছিল, তাহলে সে যেন দুনিয়ার সমস্ত লোককেই হত্যা করে ফেললো। কেননা, আল্লাহর কাছে সমস্ত সৃষ্টজীব সমান। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোন নির্দোষ লোককে হত্যা করা থেকে বিরত থাকলো, ওটাকে হারাম জানলো, তবে সে যেন সমস্ত মানুষের প্রাণ বাঁচালো। কেননা, সমস্ত মানুষ এভাবে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে থাকবে।

  আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান (রাঃ)-কে যখন বিদ্রোহীরা ঘিরে ফেলে, তখন হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) তাঁর কাছে গিয়ে বলেনঃ “হে আমীরুল মুমিনীন। আমি আপনার পক্ষ হয়ে আপনার বিরুদ্ধাচরণকারীদের বিরুদ্ধে লড়তে এসেছি। আপনি লক্ষ্য করুন যে, পানি এখন মাথার উপরে উঠে গেছে। সুতরাং এখন তাদের সাথে যুদ্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।” এ কথা শুনে হযরত উসমান (রাঃ) বলেনঃ “তুমি কি সমস্ত লোককে হত্যা করার প্রতি উত্তেজিত হয়েছে যাদের মধ্যে আমিও একজন?” হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) উত্তরে বললেনঃ “না, না।” তখন তিনি বললেনঃ “জেনে রেখো যে, তুমি যদি একজন লোককেই হত্যা কর তবে যেন তুমি সমস্ত লোককেই হত্যা করলে। যাও, ফিরে যাও আমি চাই যে, আল্লাহ তোমাকে পুরস্কৃত করুন, পাপকার্যে লিপ্ত না করুন।” এ কথা শুনে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) ফিরে গেলেন, যুদ্ধ করলেন না। 

        হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, নবীকে এবং ন্যায়পরায়ণ মুসলমান বাদশাহকে হত্যাকারীর উপর সারা বিশ্বের মানুষের হত্যার পাপ বর্তিত হয়। আর নবী এবং ন্যায়পরায়ণ ইমামের বাহুকে মজবুত করা বিশ্ববাসীর জীবন রক্ষা করার শামিল। (Tafsir Ibn Kathir) 

3,আলে-ইমরান,আয়াত নং: 21

اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ یَقْتُلُوْنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیْرِ حَقٍّ١ۙ وَّ یَقْتُلُوْنَ الَّذِیْنَ یَاْمُرُوْنَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ١ۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍ

যারা আল্লাহর বিধান ও হিদায়াত মানতে অস্বীকার করে এবং তাঁর নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে আর এমন লোকদের প্রাণ সংহার করে, যারা মানুষের মধ্যে ন্যায়, ইনসাফ ও সততার নির্দেশ দেবার জন্য এগিয়ে আসে, তাদের কঠিন শাস্তির সুসংবাদ দাও।

3,আলে-ইমরান,আয়াত নং: 22

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ١٘ وَ مَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ

এরা এমন সব লোক যাদের কর্মকাণ্ড (আমল) দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই নষ্ট হয়ে গেছে এবং এদের কোন সাহায্যকারী নেই।

        মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিমের মধ্যে রয়েছে যে, হযরত আবু উবাইদাহ ইবনে জাররাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ হে আল্লাহ রাসূল! কিয়ামতের দিন কোন ব্যক্তির সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে’? তিনি বলেনঃ ‘সেই ব্যক্তির যে কোন নবী (আঃ)-কে হত্যা করে কিংবা এমন কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে যে ভাল কাজের আদেশ করে ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) উপরোক্ত আয়াতটি পাঠ করেন এবং বলেনঃ “হে আবু উবাইদাহ (রাঃ)! বানী ইসরাঈল দিনের প্রথমভাগে এক ঘন্টার মধ্যে তেতাল্লিশজন নবী (আঃ)-কে হত্যা করে। অতঃপর একশ সত্তর জন ঈমানদার বানী ইসরাঈলকে হত্যা করে যারা এ কাজে বাধা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে গিয়েছিল এবং তাদেরকে ভাল কাজের আদেশ করতো ও মন্দ কাজে নিষেধ করতো। তাদের সকলকে তারা দিনের শেষ ভাগে হত্যা করে। এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা ওদের কথাই বর্ণনা করেছেন।' হযরত ইবনে জারীর (রঃ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, বানী ইসরাঈল তিনশ নবী (আঃ)-কে দিনের প্রথম অংশে হত্যা করে। অতঃপর দিনের শেষাংশে তারা বাজারে তাদের শাক সজী বিক্রীর কাজে লেগে যায়। সুতরাং তাদের এ অবাধ্যতা, অহংকার এবং দুঙ্কার্যের কারণে আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে ইহজগতেও লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করেন এবং পরকালেও তাদের জন্য অপমানজনক ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “তাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিয়ে দাও। এদের সমস্ত কৃতকর্ম ইহকালেও ব্যর্থ হয়ে গেল এবং পরকালেও ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাদের জন্যে কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী থাকবে না।(Tafsir Ibn Kathir)

25,আল-ফুরক্বান ,আয়াত নং: 68

وَ الَّذِیْنَ لَا یَدْعُوْنَ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ وَ لَا یَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِیْ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالْحَقِّ وَ لَا یَزْنُوْنَ١ۚ وَ مَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ یَلْقَ اَثَامًاۙ

তারা আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্যকে ডাকে না, আল্লাহ যে প্রাণকে হারাম করেছেন কোন সঙ্গত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। এসব যে-ই করে সে তার গোনাহের শাস্তি ভোগ করবে।

তাফসীর: : ইরশাদ হচ্ছেঃ “কোন মুমিনের উচিত নয় যে, সে তার কোন মুমিন ভাইকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে।(Tafsir Ibn Kathir)

কোন মুসলমান যদি অপর কোন মুসলমানকে ভ্রমবশতঃ হত্যা করে তবে দু’টো জিনিস ওয়াজিব হবে। প্রথম হচ্ছে একটি দাসকে মুক্ত করা এবং দ্বিতীয় হচ্ছে নিহত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনকে হত্যা-বিনিময় প্রদান করা। ঐ দাসের ব্যাপারে আবার শর্ত এই যে, তাকে হতে হবে মুমিন। কাফির দাসকে মুক্ত করলে তা যথেষ্ট হবে না এবং ছোট নাবালক দাসও যথেষ্ট হবে না যে পর্যন্ত সে স্বেচ্ছায় ঈমান আনয়নের মত বয়স প্রাপ্ত না হবে।রক্তপণ হচ্ছে একশটি উট এবং এগুলো হবে পাঁচ প্রকারের। (১) বয়স প্রথম বছর পেরিয়ে দ্বিতীয় বছরে পড়েছে এরূপ বিশটি উষ্ট্ৰী। (২) এ বয়সেরই বিশটি উষ্ট্র। (৩) দ্বিতীয় বছর পেরিয়ে তৃতীয় বছরে পড়েছে এরূপ বিশটি উষ্ট্ৰী। (৪) তৃতীয় বছর পেরিয়ে চতুর্থ বছরে পড়েছে এরূপ বিশটি উষ্ট্রী। (৫) চতুর্থ বছর পেরিয়ে পঞ্চম বছরে পড়েছে এরূপ বিশটি উষ্ট্রী। এটাই হচ্ছে ভুলে হত্যার বিনিময় যা। রাসূলুল্লাহ (সঃ) ফায়সালা করেছেন। (সুনান ও মুসনাদ-ই-আহমাদ)
(Tafsir Ibn Kathir)

সুনান-ই-আবি দাউদে হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ মুমিন পুণ্যে ও মঙ্গলে বেড়ে চলে যে পর্যন্ত না সে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে। যখন সে এটা করে তখন সে ধ্বংস হয়ে যায়। (Tafsir Ibn Kathir)

যখন কোন লোক ইসলামের অবস্থায় শরীয়ত সমর্থিত কারণ ছাড়াই কোন মুসলমানকে হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম এবং তার তাওবা গ্রহণীয় হবে না। হযরত মুজাহিদ (রঃ) যখন হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর এ বর্ণনাটি শ্রবণ করেন তখন বলেন, কিন্তু যে অনুতপ্ত হয়। হযরত সালেম ইবনে আবুল জাদ (রঃ) বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) যখন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সে সময় একদা আমরা তাঁর নিকটে বসেছিলাম। এমন সময় একটি লোক এসে তাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাক দিয়ে বলে, “যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে জেনে শুনে হত্যা করে তার সম্বন্ধে আপনি কি বলেন? তিনি বলেন, তার শাস্তি জাহান্নাম যার মধ্যে সে সদা অবস্থান করবে। আল্লাহ তাআলা তার উপর রাগান্বিত, তার উপর তার অভিসম্পাত রয়েছে এবং তার জন্যে রয়েছে ভীষণ শাস্তি।’ লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করে, যদি সে তাওবা করতঃ ভাল কাজ করে এবং হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়?’ তিনি বলেন, তার মা তার জন্যে ক্রন্দন করুক, তার তাওবা ও সুপথ প্রাপ্তি কোথায়? যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তার শপথ! আমি তোমাদের নবী (সঃ) হতে শুনেছি ও তার মা তার জন্যে কাঁদুক, যে কোন মুমিনকে জেনে শুনে হত্যা করেছে সে নিহত ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তাকে স্বীয় ডান বা বাম হস্তে ধরে নিয়ে রহমানের আরশের সামনে আনবে এবং ডান হাতে বা বাম হাতে স্বীয় মস্তক ধারণ করবে। তার শিরায় শিরায় রক্ত টগবগ করবে এবং সে আল্লাহ তা’আলাকে বলবে হে আল্লাহ! সে আমাকে কেন হত্যা করেছিল তা তাকে জিজ্ঞেস করুন।

মুসনাদ-ই-আহমাদে হযরত মুআবিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ “খুব সম্ভব আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক পাপ মার্জনা করবেন, কিন্তু শুধু ঐ ব্যক্তিকে (ক্ষমা করবেন না) যে কুফরীর অবস্থায় মারা যায়, অথবা ঐ ব্যক্তিকে (মার্জনা করবেন না) যে কোন মুমিনকে ইচ্ছাপূর্বক হত্যা করে ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button