রাজনীতি

লাকসামে বিশাল জনসভায় দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা করুন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মোঃ খোরশেদ আলমঃ

বিএনপি গত ১৬ বছর ধরে সকল প্রকার গুম, খুন, হত্যা হুমকি উপেক্ষা করে রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। যতদিন দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হচ্ছে ততদিন বিএনপি রাজপথে থাকবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা বলছেন নিরপেক্ষ, দ্রুত নির্বাচন দিন। তা না হলে আপনাদের ক্ষম করবেনা এ দেশের জনগণ। দেশকে অস্থিতিশীল করবেন না। বৃহস্পতিবার বিকেলে লাকাসম ষ্টেডিয়ামে উপজেলা বিএনপির উদ্যেগে এক বিশাল জনসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। লাকসাম উপজেলা আহবায়ক কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালামের সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষনা করুন। না হলে জনগণ আবারও নির্বাচনের জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া সুষ্ঠ উন্নয়ন সম্ভব না। গত ১৫ বছর ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার নির্বাচন না দিয়ে দেশের মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। এ দেশের মানুষ গত ৩টি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। ১৫৪টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দীর প্রার্থী ঘোষনা করে সরকার গঠন করেছে। ডামি প্রার্থী দিয়ে ভোট করিয়েছেন। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এ জন্য আমরা নির্বাচন চাই। মির্জা ফখরুল বলেন, লাকসামের দুই জনপ্রিয় ব্যাক্তিকে গুম করা হয়েছে। একজন সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরু, অপর বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির পারভেজকে কার নির্দেশে গুম করা হয়েছে লাকসামবাসী তা জানতে চায়। ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আমরা গত ১৬ বছর আন্দোলন করেছি। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ৩৬দিনের মধ্যে হাসিনা ভারতে পালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করলে বিএনপি কোন ভাবে মেনে নিবে না। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের শত শত ছাত্রজনতার প্রাণের বিনিময়ে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই এ সরকারের নিকট জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা রুপ রেখা ঘোষনা করেছে। আর এসব সরকার তখনি কার্যকর হবে তখন দেশের একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ১/১১ মত কেউ স্বপ্ন দেখে, তাহলে তা কখন বাস্তবায়ন হবে না। এ দেশের জনগণ আবার রাস্তায় নেমে আসবে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ২০ হাজার নেতকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ২ হাজার নেতাকর্মীকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনের কারনে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা ও তার দোসররা এদেশ থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ভারতে। ভারতে বসে শেখ হাসিনা এদেশকে আবারও অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আবারও নৈরাজ্যের দিকে ঢেলে দেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, দেশ এখন যে অবস্থায় আছে তাতে এ দেশে শান্তি আসবে না। স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার ১’শ ৮০ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। এ দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরাএকটি সুন্দর পালামেন্ট তৈরি করতে চাই। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে হাসিনাকে এদেশ থেকে তাড়িয়েছি। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দেশে অস্থিতীশীল করতে না পারে সেইজন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিগত ২৪ বছর পর লাকসামে এ প্রথম বিএনপির জনসভা। ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাকসাম ষ্টেডিয়ামে আসার কথা ছিল। নিরাপত্তার কারনে শেস মূহূর্তে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জননসভাপটি বাতিল করেন। এরপর এ প্রথম বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়ে। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা মনিরুল হক চৌধুরী, সাবেক কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম, জাকারিয়া তাহের সুমন, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button