পাঁচমিশালি

দরজায় কড়া নাড়ছে রমজান বাজার উত্তপ্ত, ঘুষ, চাঁদাবাজি, কালোবাজারি ও যানজটে নাকাল

রমজান একটি রহমতের মাস। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির জন্য রমজান। প্রতি বছর রমজান মাসে এলে আমাদের বাংলাদেশে জনদূর্ভোগ বেড়ে যায়। রমজানকে টার্গেট করে ব্যবসায়ীদের কারসাজি বেড়ে যায়। অবৈধ মজুত করে তেল, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, চিনি ইত্যাদির দাম বৃদ্ধি করার মতা সুযোগ রমজান ছাড়া অন্য মাসে সম্ভব নয়।

লেবু, খেজুর, শশা, টমেটু ও বেগুনের দামে আগুন লেগে যায়। এদিকে বিভিন্ন মসলার দাম বৃদ্ধি করে ক্রেতাদেরকে ঠকাতে বিশেষ তৎপর হয়ে ওঠে অসৎ ব্যবসায়ীরা। প্রতি রমজান মাসে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা মানুষকে জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অফিস আদালতে চলে ওপেন ঘুষ।

স্বাভাবিক অবস্থায় সরকারি অফিসে যে পরিমাণ ঘুষ দাবি করা হয় রমজান মাসে তার চেয়ে বেশি ঘুষ দাবি ও আদায় করা হয়। কারণ কর্মচারিরা সেবাগ্রহিদেরকে প্রকাশ্যে বলে ফেলে, “ ঈদের বখশিস দিয়া যান। অনেক সরকারি অফিসে ঘুষ না দিলে ফাইল গায়েব হয়ে যায়। যখন যেই দল ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলের নেতাকর্মীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ও সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজিতে মেতে ওঠে। নেতারা দোকানে দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। মহাসড়কে বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের গড়ি আটকিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। ওদের চাহিদামত চাঁদা দিতে না চাইলে হয়রানির শিকার হতে হয়। এসব চাঁদাবাজির সাথে পুলিশও জড়িত।

ট্রেন, স্টিমার ও লঞ্চগুলোতে কালোবাজারিরা বিশেষ তৎপর হয়ে ওঠে। রমজানের শেষের দিকে পরিবারের সাথে ঈদ করতে যারা সড়ক, নৌ ও রেলপথে বাড়ি যান তাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। বাসের টিকেট দুই থেকে তিনগুন বেড়ে যায়। এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সহায়তায় ট্রেনের টিকেট হাওয়া হয়ে যায়। অবশ্য দালালদের সাথে যোগাযোগ করলে বাড়তি মূল্যে টিকেট পাওয়া যায়।

প্রতি বছর ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অবৈধ পথে প্রচুর টাকা আদায় করে থাকে। নৌপথেও একই অবস্থা। বিকেলে অফিস ছুটির আগ থেকে শহরে যানজটে নাকাল অবস্থা। যানজটের কারণে অনেকেই অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে না পেরে রাস্তায় ইফতার সারতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতি বছর রমজান মাসে অরেকটি অভিজ্ঞতার বিষয় রয়েছে। সেহরির অনেক আগ থেকে বিভিন্ন মসজিদের মাইক দিয়ে কিছু মোল্লা মৌলভিরা উচ্চ শব্দে চিৎকার করতে থাকে।

ওরা মাইক দিয়ে প্রচন্ড শব্দে চিৎকার করে মানুষকে ঘুম থেকে ওঠিয়ে দেয়। ওদের বিকট চিৎকারে অসুস্থ মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা অনেক ক্ষতির শিকার হয়। ওদের কান্ডকারখানা দেখলে মনে হয় সেহরির সময় সম্পর্কে রোজাদাররা যেন কিছুই জানেন না। সব মোল্লারা জানে। প্রতিটি বাড়িতে মোবাইল আছে। ফোনে এলার্ম দিয়ে রাখলে রোজাদারগণ সেহরির সঠিক সময় ঘুম থেকে উঠতে পারে।

এ ক্ষেত্রে মাইক দিয়ে প্রচন্ড শব্দে মোল্লাদের চেচামেচির কতটুকু প্রয়োজন আছে তা বর্তমান সভ্য সমাজ ভালভাবেই উপলদ্বি করতে পারে। মোল্লাদের এসব বাড়তি কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত অনেক লোক ওদের হাতে আক্রমনের শিকার ও লাঞ্চিত হয়েছেন। এসব বর্বরতার অবসান হওয়া দরকার

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button