চট্টগ্রাম বিভাগ

পরশুরামে  অভিযানে ও থামছেনা মাদক

শিব ব্রত: মাদকের থাবায় নাস্তানাবুদ সীমান্তবর্তী উপজেলা পরশুরাম। মাদকের বিষে নিঃশেষ  হয়ে যাচ্ছে একটি প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল-সর্বত্রই নেশা এখন হাতের নাগালে। 

পরশুরামে প্রতিনিয়ত চলছে মাদকবিরোধী অভিযান। অভিযান চললেও থেমে নেই এর বিস্তার। প্রতিনিয়ত  উদ্ধার হচ্ছে ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটসহ, ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা। গতকাল রবিবার ও যৌথবাহিনীর অভিযানে পরশুরাম পোষ্ট অফিস রোড থেকে ইসমাইল হোসেন রনি এবং উপজেলার  ধনীকুন্ডা গ্রাম থেকে সাইফুল ইসলাম নামে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে যথাক্রমে ইয়াবা  ও বিপুল পরিমাণ বিদেশী মদ সহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নেশাজাতীয় এসব দ্রব্যের বিস্তারের এই সর্বনাশা চিত্র যেভাবে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি করছে, সেভাবে একটি প্রজন্মের চিন্তার জগতে বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি করছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফল খুবই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মাদকের প্রভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এটা সমাজের জন্য বড় ধরণের বিষফোঁড়া। আগের তুলনায় গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল এবং ট্যাপেন্ডাল ট্যাবলেট বেশি সেবন করছে মাদকসেবীরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পরশুরাম উপজেলা মাদকের নিরাপদ কেনাবেচার স্পট। মাদক ব্যবসায়ীরা  বিভিন্ন স্পটে এসে মাদক বিক্রি করে।  পরশুরাম উপজেলার  বিলোনীয়ায় তালুক পাড়া খোন্দকিয়া গ্রাম ও গ্রাম্য দোকানে, থানার উত্তর ও পূর্বপাশের গ্রামে, কাউতলী রোড, পূর্ব কোলাপাড়া, সি,এন,জি ষ্টেশন,  বাস টার্মিনালের শেডঘর, রেলক্রসিংয়ের   বস্তি, হাসপাতাল মোড়, সুবার বাজার চৌমুড়ী, অনন্তপুর মডেল হাইস্কল সংলগ্ন বস্তি ও তার উত্তর পাশের এলাকা, বাবুলের কলোনী, বৈদ্যের দীঘির পাড়ের দোকান, মুহুরী স্টীল ব্রীজ,  কলেজ রোড, উপজেলা গেজেটেড কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার সংলগ্ন পরিত্যক্ত বিল্ডিং, সমাজ সেবা কার্য্যালয়ের বারান্দায়, ছয়ঘরিয়ার বাগান, টি এন টি অফিসের পিছনে, তহসিল অফিসের পুকুর পাড়ে, ও অনন্তপুর রাস্তাসহ   পরশুরাম বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে প্রকাশ্যে চলে মাদকের বেচা কেনা চলে ।

অনেক সময় মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধার জন্য স্থান পরিবর্তন করে।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়  এসব মাদক কেনাবেচা ও সেবনে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজের কোমলমতি ছাত্র কিশোরসহ যুব ও তরুণসমাজ। এতে চরম উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।মাদক ব্যবসায় প্রচুর টাকা উপার্জনের আশায় খুব সহজেই মাদক ব্যবসায় বেকার যুবকরা জড়িয়ে পড়ছে।

এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায় , বর্তমান মাদকের ভয়াল থাবা সব জায়গাতেই,।প্রায়ই দেখা যায়, মাদকসেবীদের পরিবারে সবসময়ই  লেগে থাকে ঝগড়াবিবাদ । পরিবার থেকে মাদকসেবীদের মাদকের  টাকা যোগান দিতে না পারলে পরিবারে খুনোখুনির ঘটনা ও ঘটে থাকে।যার কারণে পরিবারে অশান্তি বিরাজ করে।

অনেক মাদকসেবী নেশার টাকা যোগাড় করতে না পারলে এলাকায় চুরি ছিনতাইসহ ডাকাতি ও করে থাকে।

এলাকাবাসী আরো জানায়,,যদি মাদক নির্মূল করতে হয়ে  তাহলে আগে মাদক কারবারী ও এর গডফাদার কে ধরতে হবে তাহলেই মাদক বন্ধ করা সম্ভব। মাদক রুখতে সবার সহযোগিতা ও সচেতনতার বিকল্প নেই।

পরশুরাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) আব্দুল  হাকিম  স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুশীল সমাজসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করে জানান, প্রতিদিনই আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান চলছে ও চলবে। তিনি জানান, স্থানীয় সমাজের সচেতন মানুষগুলো যদি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে তবেই মাদক চোরাচালান ও মাদক সেবনকারী এবং মাদক ব্যবসায়ী চিরতরে নির্মূল করা সম্ভব হবে বলে।

পরশুরাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন,মাদক নির্মূল এটা আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।প্রতি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এবিষয়ে সচেতনতা ও প্রতিরোধের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে এবং নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button