আপনি কি সঠিকভাবে জাকাত আদায় করেছেন?

সোনা-রূপার যাকাত।
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ঘোড়া ও গোলামের যাকাত থেকে তোমাদের নিষ্কৃতি দিলাম। তবে তোমরা প্রতি চল্লিশ দিরহামে এক দিরহাম (যাকাত) দিবে।
কেউ বছরের মাঝখানে কোন সম্পদের মালিক হলে।
’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন মালের যাকাত নেই।
যেসব মালের উপর যাকাত ধার্য হয়।
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেনঃ পাঁচ ’ওয়াসাক’-এর কম পরিমাণ খেজুরে, পাঁচ ’উকিয়া’-এর কম পরিমাণ মুদ্রায় এবং পাঁচের কম সংখ্যক উটে যাকাত নেই।
যাকাত বাবদ নিকৃষ্ট মাল দেয়া নিষেধ।
আওফ ইবনু মালিক আল-আশজাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে এসে দেখেন যে, এক ব্যক্তি মসজিদে কয়েকটি খেজুরের ছড়া ঝুলিয়ে রেখেছে। তাঁর হাতে ছিল একটি ছড়ি। তিনি ছড়ি দিয়ে এগুলোতে টোকা দিলেন এবং বললেনঃ ইচ্ছা করলে এই দানকারী আরও উৎকৃষ্টগুলো দান করতে পারতো। এই দানের মালিক কিয়ামতের দিন তার নিকৃষ্ট মালই খেতে পাবে।
সচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি যাচ্ঞা করে।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষের মাল চেয়ে বেড়ায়, সে মূলত জাহান্নামের জ্বলন্ত অঙ্গার চেয়ে বেড়ায়। অতএব সে তা কম সংগ্রহ করুক বা বেশি সংগ্রহ করুক।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সচ্ছল ও সুস্থ-সবল ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল নয়।
যে মালে যাকাত ফরয
হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী করীম (সা) কে বলতে শুনেছেন পাঁচ ‘অসক এর যেয়ে কম পরিমাণ খেজুরে, পাঁচ ‘উকিয়া এর কম পরিমাণ মুদ্রায় এবং পাঁচটির চেয়ে কম সংখ্যক উটের যাকাত নেই।
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন পাঁচটি উটের কম হলে এতে যাকাত নেই। পাঁচ ‘উকিয়া’ এর কম মুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচ ‘অসক এর চেয়ে কম ফসলে যাকাত নেই।
ন্যায় নিষ্ঠার সাথে যাকাত আদায়কারী.
রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ ন্যায়নিষ্ঠার সাথে যাকাত আদায়কারী আল্লাহ্ তা’আলার পথে জিহাদকারী সৈনিকের সমান (মর্যাদা সম্পন্ন) যে পর্যন্তনা সে বাড়িতে ফিরে আসে।
যে লোকের জন্য যাকাত নেয়া (ভোগ করা) বৈধ নয়
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের নিকটে যে লোক হাত পাতে (সাহায্য প্রার্থনা করে) অথচ তার এটা হতে বাঁচার মত সম্বল আছে, সে লোক কিয়ামত দিবসে তার মুখমণ্ডলে এই সাহায্য চাওয়ার ক্ষত নিয়ে আল্লাহ্ তা’আলার সামনে উপস্থিত হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! কি পরিমাণ সম্পদ থাকলে সে লোক অন্য কারো নিকটে হাত পাততে পারবে না? তিনি বললেনঃ পঞ্চাশ দিরহাম বা সমমূল্যের স্বর্ণ।
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অবস্থাপন্ন সচ্ছল ও সুস্থ-সবল লোকের জন্য ষাকাত নেয়া বৈধ নয়।
আত্মীয়-স্বজনদের যাকাত দেয়া
গরীবদের দান-খায়রাত করা শুধু দান বলেই গণ্য হয়; কিন্তু আত্মীয়-স্বজনকে দান করলে তা দানও হয় এবং আত্মীয়তাও রক্ষা করা হয়।
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে দান করা
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন। তার পক্ষে আমি দান-খয়রাত করলে তার কি কোন কল্যাণে আসবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ। সে বলল, আমার একটি বাগান আছে। আপনাকে আমি সাক্ষী রেখে তার পক্ষ থেকে তা দান করলাম।



