শয়তানের সবচেয়ে বড় ৩টি ফাঁদ: মুসা (আ.) ও ইবলিসের কথোপকথন থেকে শিক্ষা

পবিত্র কুরআনে বর্ণিত নবী-রাসূলদের ঘটনাবলী আমাদের জন্য শিক্ষণীয় উপাদানে ভরপুর। তেমনি একটি বিস্ময়কর কথোপকথন হযরত মুসা (আ.) এবং ইবলিস শয়তানের মধ্যে ঘটেছিল, যা আমাদের শয়তানের চক্রান্ত থেকে বাঁচতে অমূল্য নির্দেশনা দেয়। মুসা (আ.) একবার শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন তার অভিজ্ঞতার সবচেয়ে বড় ফাঁদ কোনটি, যা দিয়ে সে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে।
মুসা (আ.) বললেন, “আচ্ছা, তুমি তো মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানান ফাঁদ পেতে থাকো। সুতরাং, তোমার অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে বড় ফাঁদ কোনটি?”
শয়তান প্রথমে কিছুটা অবাক হয়ে বলল, “আপনি তো বড় অদ্ভুত প্রশ্ন করেছেন! এটা কী করে হয় যে, আমার সারা জীবনের অভিজ্ঞতা আপনাকে বলে দেবো?”
হযরত মুসা (আ.) বারবার পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। অবশেষে শয়তান তার গোপন কৌশলগুলো উন্মোচন করতে বাধ্য হলো। সে বলল, “আমার অভিজ্ঞতার সার-নির্যাস তিনটি বিষয়। যথা:”
১. ভালো নিয়ত ভুলিয়ে দেওয়া:
“আপনি যদি সদকা করার নিয়ত করেন, তবে সাথে সাথে তা পূরণ করে দেবেন। কারণ আমার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে যে, বান্দার ভালো নিয়ত ভুলিয়ে দেওয়া। আমি যাকে ভুলিয়ে দিই তার আর স্মরণ হয় না। বান্দা এ কথাও ভুলে যায় যে, সে কোনো নিয়ত করছে কি-না!”
(শিক্ষা: ভালো কাজের ইচ্ছা বা নিয়ত মনে আসার সাথে সাথেই তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করুন। শয়তান আমাদের এই ভালো ইচ্ছাকে বিলম্বিত করিয়ে পরে ভুলিয়ে দেয়।)
২. কসম ভঙ্গ করানোর চেষ্টা:
“কেউ যখন আল্লাহর নামে কোনো কসম করে, আমার চেষ্টা থাকে তার কসম ভঙ্গ করার ব্যবস্থা করা। যেমন, কেউ কসম করল যে, সে আর কখনো গুনাহ করবে না। তখন আমি তার পেছনে বিশেষ কৌশল প্রয়োগ শুরু করি, যাতে সে অবশ্যই গুনাহে লিপ্ত হয়।”
(শিক্ষা: আল্লাহর নামে করা কসমের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ও অটল থাকুন। শয়তান সবসময় চাইবে আপনার সংকল্প ভঙ্গ করাতে।)
৩. গায়রে মাহরামের সাথে নির্জনতা:
“যখন কেউ গায়রে মাহরামের সাথে একান্তে বসে, তখন আমি তাদের অন্তরে পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করে দিই। আর এ কাজ আমি আমার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে করাই না; বরং নিজে করি!”
(শিক্ষা: এটি শয়তানের সবচেয়ে শক্তিশালী ফাঁদগুলোর একটি। গায়রে মাহরাম অর্থাৎ যাদের সাথে বিয়ে জায়েজ এমন বিপরীত লিঙ্গের সাথে নির্জনে অবস্থান করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ। শয়তান তখন নিজে এসে কাজ করে এবং অন্তরকে প্রলুব্ধ করে।)



