অন্যান্য

ভয়াবহ ট্র্যাজেডি: জীবননগরে ভৈরব নদে গোসলে নেমে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু

‎ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি মোঃ অমিদ হাসান 

‎চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামে ঘটেছে হৃদয়বিদারক এক দুর্ঘটনা।

‎রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে ভৈরব নদে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে দু’টি শিশুমন।মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া শিশু দুটি হলো—রিমন হোসেন (৭) এবং জুনায়েদ হোসেন (৭)।তারা উভয়েই জীবননগরের মুক্তারপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।রিমনের বাবা মো. সজিব হোসেন এবং জুনায়েদের বাবা মো. জুয়েল মিয়া।

‎দু’জনই কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

‎শিশু দুটি একে অপরের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল।

‎দুপুরে বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার পর তারা বাড়ি ফিরে আসে।

‎এরপর বাড়ির পাশের ভৈরব নদে গোসল করতে যায় রিমন, জুনায়েদ ও তাদের বন্ধু রাব্বি।

‎নদের মাঝে পাটজাগ দেওয়া ছিল, যেটি নদীর মধ্যে সাময়িকভাবে বাঁশ ও গাছ দিয়ে তৈরি।

‎তিন বন্ধু সেখানে খেলা করছিল।

‎একপর্যায়ে রিমন পা পিছলে পানিতে পড়ে যায়।

‎তাকে রক্ষা করতে ঝাঁপ দেয় জুনায়েদ।

‎কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে তারা দু’জনই পানিতে তলিয়ে যায়।পাশে থাকা রাব্বি ভয়ে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায়।

‎সে তার পরিবারকে ঘটনাটি জানায়।

‎খবর শুনে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী ছুটে আসে নদীর পাড়ে।দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়।কিছুক্ষণ পর নদী থেকে দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।তখন পর্যন্ত তাদের শরীরে প্রাণের কোনো চিহ্ন ছিল না।

‎দুই শিশুর মৃত্যুতে মুহূর্তেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।পরিবারের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

‎মায়েরা সন্তানদের নিথর দেহ জড়িয়ে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

‎প্রতিবেশীরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

‎দুই পরিবারেই শোকের মাতম চলছে।

‎এলাকাবাসীর মতে, নদীতে এই পাটজাগগুলো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।শিশুদের জন্য তা একেবারেই নিরাপদ নয়।তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

‎ঘটনার খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শেষে মৃতদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

‎এ বিষয়ে জীবননগর থানার ওসি মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, “শিশু দুটি নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে।ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”এ দুর্ঘটনা নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন।স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও পরিবার দুটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।এদিকে বিদ্যালয়েও শোক প্রকাশ করা হয়েছে।প্রধান শিক্ষক শিশু দুটির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়ার আয়োজন করেন।বিদ্যালয়ে একদিনের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, তারা ছিল খুব ভদ্র ও মনোযোগী ছাত্র।প্রতিদিন হাসিমুখে স্কুলে আসতো তারা।তাদের মৃত্যুতে শিক্ষক ও সহপাঠীরা হতবাক ও দুঃখ ভারাক্রান্ত।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকাবাসী তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে পোস্ট দিচ্ছেন।এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করলো, শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।নদী বা পুকুরে শিশুরা খেলতে গেলে বড়দের তত্ত্বাবধান থাকা জরুরি।একটুখানি অসাবধানতা থেকে চিরতরে নিভে যেতে পারে একটি শিশুর জীবন।এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যেন ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা না ঘটে এটাই এখন এলাকাবাসীর প্রধান চাওয়া।

‎শিশু দুটি চলে গেলেও তাদের স্মৃতি থেকে যাবে সবার মনে।


‎ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি
: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামে ঘটেছে হৃদয়বিদারক এক দুর্ঘটনা। রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে ভৈরব নদে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে দু’টি শিশুমন।মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া শিশু দুটি হলো—রিমন হোসেন (৭) এবং জুনায়েদ হোসেন (৭)।তারা উভয়েই জীবননগরের মুক্তারপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।রিমনের বাবা মো. সজিব হোসেন এবং জুনায়েদের বাবা মো. জুয়েল মিয়া।

‎দু’জনই কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। শিশু দুটি একে অপরের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। দুপুরে বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার পর তারা বাড়ি ফিরে আসে।

‎এরপর বাড়ির পাশের ভৈরব নদে গোসল করতে যায় রিমন, জুনায়েদ ও তাদের বন্ধু রাব্বি। নদের মাঝে পাটজাগ দেওয়া ছিল, যেটি নদীর মধ্যে সাময়িকভাবে বাঁশ ও গাছ দিয়ে তৈরি। তিন বন্ধু সেখানে খেলা করছিল। একপর্যায়ে রিমন পা পিছলে পানিতে পড়ে যায়। ‎তাকে রক্ষা করতে ঝাঁপ দেয় জুনায়েদ।

‎কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে তারা দু’জনই পানিতে তলিয়ে যায়।পাশে থাকা রাব্বি ভয়ে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায়।‎সে তার পরিবারকে ঘটনাটি জানায়। খবর শুনে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী ছুটে আসে নদীর পাড়ে।দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়।কিছুক্ষণ পর নদী থেকে দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।তখন পর্যন্ত তাদের শরীরে প্রাণের কোনো চিহ্ন ছিল না।

‎দুই শিশুর মৃত্যুতে মুহূর্তেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।পরিবারের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।মায়েরা সন্তানদের নিথর দেহ জড়িয়ে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রতিবেশীরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। ‎দুই পরিবারেই শোকের মাতম চলছে।

‎এলাকাবাসীর মতে, নদীতে এই পাটজাগগুলো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।শিশুদের জন্য তা একেবারেই নিরাপদ নয়।তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ঘটনার খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শেষে মৃতদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

‎এ বিষয়ে জীবননগর থানার ওসি মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, “শিশু দুটি নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে।ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”এ দুর্ঘটনা নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন।স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও পরিবার দুটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।এদিকে বিদ্যালয়েও শোক প্রকাশ করা হয়েছে।প্রধান শিক্ষক শিশু দুটির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়ার আয়োজন করেন।বিদ্যালয়ে একদিনের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, তারা ছিল খুব ভদ্র ও মনোযোগী ছাত্র।প্রতিদিন হাসিমুখে স্কুলে আসতো তারা।তাদের মৃত্যুতে শিক্ষক ও সহপাঠীরা হতবাক ও দুঃখ ভারাক্রান্ত।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকাবাসী তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে পোস্ট দিচ্ছেন।এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করলো, শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।নদী বা পুকুরে শিশুরা খেলতে গেলে বড়দের তত্ত্বাবধান থাকা জরুরি।একটুখানি অসাবধানতা থেকে চিরতরে নিভে যেতে পারে একটি শিশুর জীবন।এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যেন ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা না ঘটে এটাই এখন এলাকাবাসীর প্রধান চাওয়া।

‎শিশু দুটি চলে গেলেও তাদের স্মৃতি থেকে যাবে সবার মনে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button