ইয়াবার গডফাদার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিসার

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম জেলা পটিয়া র্যাবের অভিযানে ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়া মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ৮ নভেম্বর শনিবার মামুন সহ পাঁচজনকে পটিয়া খরনা কাদের ফিলিং স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭ এর একটি চৌকস টিম।প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসা মামুন ইয়াবার এই চালানের “মূল হোতা” বলে নিজেই স্বীকার করেছেন।
অভিযানকালে উদ্ধারকৃত ৬০ হাজার পিস ইয়াবার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ-ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে নগদ ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৫ টাকা ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত দুইটি মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ জনসহ পলাতক আরও একজনের নাম উল্লেখ করে পটিয়া থানায় র্যাব-৭ একটি মামলা দায়ের করে।
পটিয়া মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক একেএম আজাদ উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়া তাদের অফিসের উপ-পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুনকে ১০ নভেম্বর সোমবার সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একেএম আজাদ উদ্দিন আরও জানান, আবদুল্লাহ আল মামুন অসুস্থতার কথা বলে ঠিকমত অফিসে আসতো না এবং সে প্রায় ৫-৬ বছর ধরে পটিয়া অফিসে কর্মরত ছিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে র্যাব-৭এর কাছে গোপন খবর আসে যে, কক্সবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে দুটি মাইক্রোবাস চট্টগ্রামের দিকে আসছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে পটিয়া খরনা কাদের ফিলিং স্টেশন এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়। সন্দেহভাজন দুটি মাইক্রোবাস র্যাবের গতিবিধি বুঝতে পেরে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র্যাবের টিম গাড়ি দু’টি থামিয়ে তল্লাশি চালায়।
এসময় ড্রাইভারের সিটের নিচে রাখা ব্যাগ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সহকারী উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন তার পদমর্যাদার সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাদক কারবারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মাদক পরিবহনের সময় তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জ্যাকেট, ক্যাপ ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করতেন, যাতে কেউ সন্দেহ না পারে। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা তার নির্দেশনায় কাজ করতো বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন এই মাদকবারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পটিয়া থানার উপপরিদর্শক প্রদীপ দে বলেন, প্রায় দুই কোটি টাকার এই ইয়াবা চালানের মূল হোতা আবদুল্লাহ আল মামুন। প্রদীপ দে আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার পেছনে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনের রিমান্ডের আবেদন
করেছেন পুলিশ।



