নজিরবিহীন এক মারামারি দেখল উগান্ডাবাসী। যারা আইন প্রণয়ন করেন তারাই আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, মারামারি করেছেন খোদ সংসদের ভেতরেই।
প্রেসিডেন্টের মেয়াদ বাড়ানোকে কেন্দ্র করে পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডার পার্লামেন্টে অধিবেশন চলাকালে মঙ্গলবার মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে দেশটির সংসদ সদস্যরা। একে অপরকে চড়, কলার ধরে ঘুষি মারা, এমনকি চেয়ার ছোড়াছুড়ির মতো সব ঘটনাই ঘটেছে এখানে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। তবে নিরাপত্তারক্ষীদের হস্তক্ষেপে এ পরিস্থিতি শান্ত হয়। খবর রয়টার্সের।
মঙ্গলবার উগান্ডার সংসদে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল প্রেসিডেন্টের শাসনের মেয়াদ বৃদ্ধির নিয়ে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়োয়েরি মুসেভেনি তিন দশক ধরে ক্ষমতায় আছেন। উগান্ডার সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নের জন্য ৭৫ বছরের নিচে বয়স হতে হবে। ২০২১ সালে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। বর্তমান প্রেসিডেন্টের বয়স ৭৩ বছর। সে ক্ষেত্রে তার আর মনোনয়ন পাওয়ার কথা নয়। মুসেভেনি তাই চেয়েছিলেন সংবিধান থেকে ওই ধারাটাই তুলে দিতে। পাশাপাশি চেয়েছিলেন সংসদ যেন তাকে আরও একবার প্রেসিডেন্ট পদে বসতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রেসিডেন্টের ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় দেশের বিভিন্ন নাগরিক ও ধর্মীয় সংগঠন। বিরোধিতা করেন মুসেভেনির দলের অনেক নেতাও। কিন্তু এই বিরোধিতা যে সংসদে একেবারে হাতাহাতিতে রূপ নেবে তা কেউ বুঝতে পারেনি।
ভিডিওতে দেখা যায়, স্পিকার ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যকে সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্ট পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার বিধান সংবলিত বিলটি উত্থাপনের অনুমতি দিলে বিরোধী সংসদ সদস্যরা এগিয়ে এসে মারধর শুরু করেন। এ সময় স্পিকার রেবেকা কাদাগা বলেন, ‘দয়া করে আপনারা বসুন। আপনারা মুখ দিয়ে কথা বলুন, হাত দিয়ে নয়।’
পরে উপায়ান্তর না দেখে স্পিকার অন্য লঘু ইস্যুতে চলে যান। ছয় ঘণ্টার অধিবেশন চলাকালে সফলভাবেই ওই বিলটি উত্থাপন ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হন বিরোধীরা। তারা পডিয়ামের দখল নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। স্পিকার এ সময় অর্ডার অর্ডার বলেও তাদের থামাতে পারেননি। পরে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এদিকে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগের প্রতিবাদে রাজধানী কামপালায় বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও বিরোধী কর্মীরা। তাদের ওপর টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।