নেত্রকোনায় নিজ বাড়িতে দম্পতি খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম মো. নয়ন মিয়া (৪০)। অপরজনের নাম তদন্তের স্বার্থে পুলিশ গোপন রেখেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত শুক্রবার দুপুরে শহরের সাতপাই এলাকায় বাবলু সরণি সড়কের পাশে একটি বাড়ি থেকে পুলিশ ওই দম্পতির লাশ উদ্ধার করে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন মিহির কান্তি বিশ্বাস (৭০) ও তাঁর স্ত্রী তুলিকা রানী চন্দ ওরফে সবিতা (৫৮)।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত নয়টার মধ্যে যেকোনো এক সময় শ্বাসরোধে তাঁদের হত্যা করা হয়।
মিহির কান্তি সর্বশেষ সদর উপজেলার কৃষ্ণ গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তুলিকা রানী সমাজসেবা অধিদপ্তরের নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের দায়িত্বে ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও নিহত দম্পতির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়িতে এই দম্পতি একাই থাকতেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ঢাকায় একটি বেসরকারি সংগঠনে চাকরি করেন। আর মেয়ে সিলেটে স্বামীর সঙ্গে থাকেন। গত মার্চে এই দম্পতি বাড়িটির একটি কক্ষ রাজীব পণ্ডিত নামের একজনকে ভাড়া দেন। তিনি জানান, বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে খাবারের পানি আনার সময় তুলিকা চন্দের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপর রাত আটটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন মালিকের বাড়ি তালাবদ্ধ। এরপর থেকে তাঁদের আর সাড়া মেলেনি। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি খাবারের পানির জোগাতে মোটর চালানোর জন্য তুলিকা চন্দের সন্ধানে খোঁজ নেন। এ সময় ঘরের দরজার কাছে দুর্গন্ধ পাওয়ার পর তিনি প্রতিবেশীদের ডাকেন। পরে প্রতিবেশীরা ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান চৌধুরীর উপস্থিতিতে তালা ভেঙে রান্নাঘরের মেঝেয় তুলিকার ও বসার ঘরের খাটের ওপর মিহিরের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ওই দম্পতির ছেলে সুমন বিশ্বাস (৩৪) ওই দিন গভীর রাতে বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় খুনসহ ডাকাতির মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত নয়টার মধ্যে যেকোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। খুনের পেছনে সম্ভাব্য সবদিক মাথায় রেখে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত খুনিদের আইনের আওতায় সম্ভব হবে।