দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ে না গিয়েও এখন থেকে দুর্নীতির অভিযোগ করা যাবে। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঘুষ-দুর্নীতি রোধে হটলাইন সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। মোবাইল ফোন ও টেলিফোনের মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে বিটিআরসি থেকে দুদক একটি ইউনিক নম্বর (হটলাইন নম্বর) বরাদ্দ নিয়েছে। নম্বরটি হচ্ছে ১০৬। শিগগিরই ১০৬ হটলাইন নম্বরটি চালু হবে। এদিকে অভিযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে কী ধরনের নীতিমালা অনুসরণ করবে সেটা নিয়েও খসড়া নীতিমালা তৈরি করছে দুদক। এ ব্যাপারে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য ইত্তেফাককে বলেন, টেলিফোনে কোন ধরনের অভিযোগ বিবেচনায় নেওয়া হবে তা নির্ধারণ করতে কমিশন কাজ করছে।টেলিফোনে দেওয়া অভিযোগ প্রথমে লেখা হবে এবং পরে তা পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য কমিশনে পেশ করা হবে। কমিশন সেটা যাচাই করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সকল ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীর গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে। দুদক কর্মকর্তারা মনে করছে, দুদকের এ হটলাইন চালু হলে জনগণ, বিশেষ করে সরকারি অফিসের ঘুষ সম্পর্কিত ঘটনাসহ দুর্নীতির চলমান ঘটনার ব্যাপারে তাত্ক্ষণিক অভিযোগ জানাতে পারবে সাধারণ মানুষ। যা দুর্নীতি হ্রাসে সহায়ক হবে। এ ছাড়া অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ জানাতে আগ্রহ দেখাবে। এটা সমাজে দুর্নীতির ব্যাপারে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়। এ ব্যাপারে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারি অফিসের সেবা না পেলেও অনেকেই দুর্নীতির অভিযোগ করে না। লিখিত অভিযোগ করার ব্যাপারে অনেকেরই অনীহা রয়েছে। এসব কারণে সরকারি কার্যালয়ের ছোট-বড় অনেক দুর্নীতি অন্তরালে ঢাকা পড়ে যায়। এতে ওই সব দুর্নীতিবাজরা বহাল তবিয়তে দুর্নীতি করে চলে। অভিযোগ দেওয়ার ব্যাপারে মানুষের অনীহার ব্যাপারটা বিবেচনা করে দুদক হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপরদিকে এই হটলাইনের মাধ্যমে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে দুদক। কোন কোন ক্ষেত্রের দুর্নীতির অভিযোগ নেওয়া হবে সেটার ব্যাপারে নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখন সবার মোবাইল নম্বর নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই কে কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তার ব্যাপারে দুদক দ্রুত জেনে নিতে পারবে। অপরদিকে দুদকের তফসিলভুক্ত অভিযোগ না হলে অভিযোগকারীদের কী করতে হবে? কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে? সে ব্যপারে নির্দেশনা দেওয়ার গাইড লাইন করা হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, দুদকের হটলাইনটি চালাতে প্রয়োজনে একটি বিশেষ উইং তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ ব্যাপারে এক দফা প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশব্যাপী দুদক কার্যালয়ে স্থাপিত বক্সে লিখিতভাবে অভিযোগ নেওয়া হয়।