অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার হোমনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের নাজির আতিকুর রহমান ভুয়া ভাউচার এবং রশিদ দেখিয়ে সরকারি তহবিল থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আতিকুর রহমান অডিট, প্রশিক্ষণ, উপজেলা ভূমি অফিসের ফার্নিচার, ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ফার্নিচার, রেজিস্ট্রার বাঁধাই বাবদ ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দের ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাৎ করে। সম্প্রতি শাহ আলম ও আ. জলিল নামে একাধিক ব্যক্তি এসব সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার তথ্য দিয়ে ওই নাজিরের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নাজির আতিকের এসব ভাউচার জালিয়াতির তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে টনক নড়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে। পরে যেসব ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সেসব ভূমি কর্মকর্তাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তলব করা হয়। পরে বিভিন্ন ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তারা এসে ইউএনও কাছে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
স্থানীয়রা জানায়, নাজির আতিকুর রহমানের রয়েছে প্রভাবশালী দালাল সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে সে জমা খারিজ সম্পাদন, খতিয়ান সংশোধন, লিজ নবায়ন ও ডিসিআরসহ ভূমি অফিসের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা। তহসিলদার, সার্ভেয়ার, এসি ল্যান্ড ও ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে সিন্ডিকেটের বাইরে কোনো সাধারণ ব্যক্তি যদি ভূমি অফিসে কাজের জন্য আসে তাহলে তার ফাইল টেবিলে পড়ে থাকে মাসের পর মাস। সেবা প্রত্যাশীরা ওই সিন্ডিকেটের কাছে অনেকটাই জিম্মি বলে জানিয়েছেন এলাকার লোকজন। ভোক্তভুগী সেবা প্রত্যাশী চিৎপুর গ্রামের বাসিন্দা আমেনা বেগম জানান, কাজ না হওয়ায় ঘুষের টাকা ফেরত চাইলে ৩০ আগস্ট উপজেলা ভূমি অফিস থেকে তাকে লাঞ্ছিত করে বের করে দিয়েছে নাজির আতিক। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়লে এসি ল্যান্ড এবং ইউএনওর হন্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। হোমনা পৌর ভূমি কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন জানান, নাজির আতিক ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে সব অর্থই আত্মসাৎ করেছেন। তিনি জানান, যে সব ভুয়া ভাউচার তিনি অফিসে দাখিল করেছেন তার পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। অভিযুক্ত নাজির মো. আতিকুর রহমান বলেন, আমি কোনো অনিয়ম করিনি, আমার সব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এসি ল্যান্ড ম্যাডাম অবগত আছেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের শুনানি হয়েছে, আইনে যা হওয়ার তাই হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মো. শাহআলম ও আ. জলিল নামে দুই ব্যক্তি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।