মাহমুদুল হাসানঃ
মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী ইউনিয়নের তাজিম তালুকদার (৫৫)ও তার মেয়ে জামাতা মঞ্জুরুল সইসলাম মঞ্জুর (৩৫) এর প্রতারণা আর ভূমিদস্যুতায় জিম্মী হয়ে পড়েছে গ্রামবাসী। মঞ্জু শ্রীনগর উপজেলার ভূমি সহকারী অফিসের পিয়ন। বাড়ৈখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করলেও, বর্তমানে উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত। বাড়ৈখালী ভূমি অফিসের পাশেই তাজিম তালুকদারের বাড়ি সেই সুবাধে জমি-জালিয়াতি, জাল দলিল সজন, পর্চা নকলসহ দুর্নীতি করে কোটি পতি বনে যান মঞ্জু। এর নেপথ্য কাজ করে ডাক অফিসের পিয়ন তাজিম তালুকদার। এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্ক হয় জামাই-শশুর। তাজিম ডাক অফিসের পিয়ন হিসেবে কর্মরত থাকলেও, পাশা পাশি সহকারী কাজী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে নাবালকা বিবাহের একাধিক অভিযোগে মামলাও হয়েছে। একটি সুত্র জানায়, উত্তরা জসিমউদ্দিন রোড ও গুলশান এলাকায় কয়েকবার জাল টাকাসহ গ্রেপ্তার হন প্রতারক তাজিম। রয়েছে টক্কা (তক্ষক), কয়েন ও মূর্তি নিয়ে প্রতারণার অসংখ্য অভিযোগ। পাশ্ববর্তী সিরাজদিখান থানার শেখরনগর বাজারের দাতের ডাক্তার সাগর হতে ৩লাখ টাকা নিলেও, তাকে কোন তক্ষক দিতে পারেন নি। তার জামাতা মঞ্জু শাহজাহান নামে এক অসহায় ব্যক্তির জমি জাল দলিল করার মাধ্যমে দখলে নেয়। গত ১৩/১/২০১১ তারিখ একটি বায়না নামা ভূয়া দলিল সৃজন করে। ভূয়া দলিলে মঞ্জুর ও তার স্ত্রী তানজিলা তালুকদার খুশির নিকট শাহজাহান ও তার স্ত্রী রিনা বেগম তাদেরকে ১৮ শতক জমি হতে ৯ শতক জমি বিক্রয় করেছেন বলে উলেখ করেন। দলিল জালিয়াতী করার বিষয়টি নিয়ে অসহায়, হত-দরিদ্র শাহজাহান ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৭, ধারায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন, যার নং-১৮৩/১২। দলিল লেখক, মহসিন সাং-মাশুর গাও, সনদ নং-৫৪। শাহজাহান মামলা করলে, প্রতারক চক্র কৌশলে থানায় বসে তাদের দোষ স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে মামলা হতে অব্যহৃতি নিলেও, এখনো শাহজাহানের জমি বুঝিয়ে দিবে তো দূরে থাক উল্টো তাকে, ঢাকাতী, চুরি, মাদক মামলায় ফাসিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। সরজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাড়ৈখালী ইউনিয়ন শিবরাম পুর-১ নং মৌজার ১নং খাস খতিয়ান ভূক্ত ৫৬৩ নং খতিয়ানে ৭৮৫ নং দাগের ১৮ শতক ভূমি মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক-৬৫২৫/২০১১ নং দলিল মলে শাহজাহান ও তার স্ত্রীকে বরাদ্ধ দেন, যার কেইস নং-ডিসি-১১৫/১৯৯৮-৯৯। এসি কেইস নং-২১/১৯৯৮-১৯৯৯। একটি ভূমিহীন অসহায় পরিবার সরকারী জমি বরাদ্ধ পাওয়ার পরও, এমএলএস মঞ্জ ও শশুর তাজিমের প্রতারণায় আজ নিঃশ্ব। দফায়-দফায় শালিশ-মিমাংসায় বিপর্যস্ত শাহজানের পরিবার। অন্যদিকে বাড়ৈখালী মৌজায় সরকারী পিয়ন মঞ্জুর ১ লাখ ১০ হাজার টাকা শতক হারে ৪৬ শতক জমি ক্রয় করলেও, সরকারের কর ফাকি দিতে ১০ লাখ টাকা মূল্য দেখিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করিয়ে নেয়। সামান্য একজন পিয়নের ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করা নিয়ে চলছে গুনজন। এত টাকার উৎস কি! মঞ্জুর গ্রামের বাড়ি-চিতলীয়া বাজার মুন্সিগঞ্জ সদর। তার স্ত্রীর নাম তানজিলা তালুকদার খুশি। এ ব্যপারে মঞ্জুর নিকট মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে সব অস্বীকার করে বলেন,”আমি যা করি, স্যারদের সাথে আলাপ না করে করিনা, আপনার স্যারের নাম বলুন জিজ্ঞেস করতেই লাইন কেটে দেন। সরজমিন তাদের বক্তব্য জানতে চাইলে, জামাই শশুর বলেন,”এলাকার চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত আমাদের লোকজন আছে, আমাদের সম্পর্কে আপনাদের ধারনা নাই এখান হতে চলে যান, নচেৎ বড় ধরনের কিছু ঘটে যাবে”। এ ব্যপারে বাড়ৈ খালী ইউনিয়নের কাজী মোঃ বাহাউদ্দিন গাজী জানান,”ওনি আমার সহকারী হিসেবে কাজ করেন, তবে সরকারী কোন কর্মকর্তা নন”। তবে তাজিম তালুকদার নিজেকে কাজী পরিচয় দিয়ে বেড়ান বলে জানা গেছে।