মোঃ আহসানউল্লাহ হাসান ঃ
শ্রীনগরে সিডিপি মাল্টিপারপাসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মারুফ বিল্লাহ ওরফ জসিম ১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ইউরোপের স্পেনে স্থায়ী বসতি গড়ে ছদ্মবেশ ধারন করে নিজ গ্রাম আটপাড়ায় ছুটি কাটাতে ফিরে এসেছে গত ঈদুল ফিতরের দুইদিন আগে। জামাত সিবিরের ডিজাইনে মুখ ভর্তি দাড়ি আর চুলের স্টাইল নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করায় তাকে সামনে থেকে চোখে দেখে কেউ চিনতে পারে না। অথচ সে সিডিপির এমডি পদে থেকে ঠান্ডা মাথায় কৌশলে জনগনের আমানতের টাকার উপর ভর স্পেন গিয়ে সিডিপি থেকে ব্যবসার নামে অন্তত ১৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে মদের বার ও রেস্টরেন্ট খুলে নিজে স্পেনের গ্রিনকার্ডের মালিক হয়ে বিলাশী জীবন গড়ে তুলেছেন। এদিকে ৫লাখ, ১০ লাখ, ২লাখ করে আমানত সঞ্চয়কারী গ্রহকরা তাদের মুলধন হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শ্রীনগর উপজেলা জামায়তের সেক্রেটারি ও বিশিষ্ট সুদখোর আঃ তোতা মিয়ার বড় ছেলে মারুফ বিল্লাহ ওরফে জসিম ২০০৫ সালের দিকে মাদক সেবন, জুয়া খেলা আর উৎশৃংখল জীবনের কারনে তাজ্যপুত্র হয়ে এখানে সেখানে মানবেতর জীবন শুরু করে। পেটের ভাত যোগার করতে শুরু করে বাসের কাউন্টারে টিকেট বিক্রি। কিন্তু কলেজ জীবনে সিবিরের রাজনীতি করার সুবাদে উপজেলা সিবিরের সভাপতি আব্দুস সালামে নেতৃত্ব শ্রীনগরের অন্যান্য জামায়ত সিবিরের লোকজনেকে শেয়ারহোল্ডার করে ২০০৮ সালে শুরু করে সিডিপি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি। শুরু হয় তার নতুন জীবন। একবেলা ভাত খাওয়ার পয়সা যার কাছে থাকতো না, সে চলাফেরা করতো দেশের সবচেয়ে দামী সাড়ে চার লাখ টাকা মুল্যের পালসার মোটরসাইকেল দিয়ে। কিন্তু কথায় বলে কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না। ঠিক তাই, নিয়মিত বেনসন সিগারেট খাওয়া, ইয়াবা সেবন, মদ ফেন্সিডিল খাওয়া থেকে শুরু করে মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করা তার নেশা ও পেশায় পরিনত হয়। পার্টনারশিপে কানকাটা রনির সাথে শুরু করে মাদক ব্যবসা। এদিকে মারুফ সহ সিডিপির অপর কর্মকর্তারা জনগনের আমানত অন্তত ৪০ কোটি নিজেদের কবজায় নিয়ে নেয় প্রথম বছরেই। মারুফ পরিকল্পনা করে সিডিপির প্রতিষ্ঠাতা কর্মকর্তারা সবাই ইউরোপে স্যাটেল হবে। যেই কথা সেই কাজ, মারুফ নিজে জন্য ১৫ লাখ খরচ করে একমাসের মধ্যে লন্ডনের ভিসা করে লন্ডন চলে যায়। লন্ডন থেকে স্পেন। স্পেনে গিয়ে তার পার্টনার মাসুমকে নিয়ে যায় দুমাস পরে। মারুফ ও মাসুম মিলে শুরু করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর্ব। সিডিপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসাবে চালু করে মদেরবার ও খাবারের রেস্টুরেন্ট। পলাশ, সালাম সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা স্পেন যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে মারুফের হাতে তোলে দেয় প্রায় ১৮ কোটি টাকা। টাকা হাতে পাওয়ার পর মারুফ তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ঐ টাকার জোড়ে মারুফ স্পেনের গ্রিনকার্ড পেয়ে দেশে বেড়াতে এসেছে ছদ্মবেশ ধারন করে। যাতে সিডিপির কোন গ্রাহক তাকে চিনতে না পারে। এ ব্যাপারে মারুফ ওরফে জসিমের পার্টনার আক্কাস মাঝি পলাশ বলেন, মারুফের নিকট স্পেনে সিডিপির যে মুলধন জমা আছে তা থেকে গ্রাহকদের কিছু কিছু টাকা ফেরত দেয়ার পরিকল্পনা করেই সে দেশে এসেছে।