৫০০ টাকা ইলিশের কেজি

0
403

রিপোর্ট ‘দেইখ্যা লন বাইছ্যা লন। তাজা ইলিশ। একদাম ৫০০ টাকা কেজি। কোনো দামাদামি চলবো না।’
এভাবেই ভ্যানে করে মাছ বিক্রি করছেন শহিদুল্লাহ। তিনি জানান, এমন কম দামে মাছ কেনার সুযোগ সবসময় আসে না। দরদাম না করে কিনে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। জানান খেয়ে মজা পাওয়া যাবে। রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ইলিশ বিক্রির চিত্র সহসাই চোখে পড়ে। দেখা যায়, ভ্যানে করে ঘুরে-ফিরে সাধারণত মাঝারি সাইজের ইলিশ বেশি বিক্রি হচ্ছে। ওজনে ৫শ-৬শ গ্রাম হবে। তবে এর চেয়েও ছোট সাইজের ইলিশ পাওয়া যায় তাদের কাছে।

Advertisement

সাধারণত ছোট সাইজের ইলিশগুলো ৪শ-৩শ টাকায় বিক্রি হয়। এগুলোর ক্রেতাও প্রচুর। জানা গেছে, ইলিশের প্রাচুর্যতায় বাণিজ্য এখন রমরমা। অনেক সবজি বিক্রেতাও সব বাদ দিয়ে ইলিশের ব্যবসা ধরেছেন।
সোমবার মিরপুরের মুসলিম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে অন্য কোনো মাছ নেই বললেই চলে। যারা অন্য মাছ তুলেছেন, তাদের বিক্রিও অনেক কম। সবাই ইলিশ কিনছেন দেদারসে।
রফিক নামে এক মাছ বিক্রেতা জানান, ‘আগে সবজি বিক্রি করতাম। গত এক সপ্তাহ ধরে ইলিশ বিক্রি করছি। একদিকে বিক্রি করে শান্তি পাচ্ছি, অন্যদিকে মুনাফাও ভালো হচ্ছে।’
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ইলিশের ছড়াছড়ি। বাজারে অন্য মাছ কিনতে এসেও মোড় ঘুরে যাচ্ছে ক্রেতাদের।
আরিফুর রহমান নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘ভাবলাম অন্য মাছের সঙ্গে সবজি কিনব। কিন্তু ইলিশের দাম কম দেখেই বেশি করে কিনলাম। মাঝারি ইলিশ হলেও দাম পড়ল ৪০০ টাকা কেজি।’ তিনি বলেন, ‘সবাই দেখলাম বেশি করে ইলিশ কিনছে, তাই আমিও কিনলাম। একবারেই ১৪০০ টাকার মাছ কিনেছি।’
পাইকারি বাজারেও অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন মাছের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ইলিশ (৮০০ গ্রামের ওপর) বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭০০ টাকার মধ্যে। ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। একইভাবে ছোট আকারের ইলিশ মানভেদে ২৫০-৪৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের এক ইলিশ ব্যবসায়ী জানান, কয়েক দিন ধরেই আড়তে প্রচুর ইলিশ আসছে। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কমছে। আগে বড় আকারের প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার টাকার বেশিতে বিক্রি হতো। এখন তা ৬০০-৭০০ টাকায় নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ সংরক্ষণে আগামী ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত এই মাছ ধরা, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আগের সপ্তাহে তাই ইলিশের বেচাকেনায় ধুম পড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, বিক্রি ও বাজারজাত করা নিষিদ্ধ হওয়ায় চাহিদা বেশি। অনেক ক্রেতা তাই আগেভাগে একটু বেশি করেই কিনে রাখছেন। এ সপ্তাহে বিক্রি আরও বাড়তে পারে। তবে চাহিদা বেশি থাকায় এ সপ্তাহে দাম একটু বাড়তে পারে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক আদেশে জানানো হয়েছে, ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ। আদেশে বলা হয়, প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস অ্যাক্ট ১৯৫০ অনুযায়ী এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ বা বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হলো।

Advertisement

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here