২২টি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া এবং পার্বত্য জেলা বান্দরবানের ভেতরেই এসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। গত ২৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত কত সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে তার সঠিক হিসাব নেই কারো কাছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা, নৌকার মাঝি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সদস্যদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে এ সংখ্যা পাঁচ লাখের কম হবে না। শুধু শাহপরীর দ্বীপ থেকেই ঢুকেছে দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গা।
স্থানীয় সূত্র এবং সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ সাগর পয়েন্ট, সেন্টমার্টিন, নাইট্যংপাড়া, সাবরাং নয়া পাড়া, ডমডমিয়া, বাহারছড়া, আলী খালী, খাড়ার খালী, মৌলভীবাজার, কাঞ্জরপাড়া, লম্বাবিল, উনছি প্রাং, কোয়াইক্যং, উলুবনিয়া, উখিয়ার পালংখালি, রহমতের বিল, ঠ্যাংখালী এবং নাইক্ষ্যংছড়ির গুমদুম, তুমরু ও সাকডালা দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গতকাল সকাল থেকে অন্তত ৪০০ নৌকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে শাহপরীর দ্বীপ থেকে সাবরাং ভাঙার মুখ এলাকায় এসে নামিয়ে দিয়ে গেছে। এর প্রতিটি নৌকা অন্তত সাত-আটবার রোহিঙ্গা বোঝাই করে সাবরাং আসে। আর প্রতিটি নৌকা কম হলেও ১০ জন করে রোহিঙ্গা নিয়ে আসে। এতে কমপক্ষে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা গতকাল এ একটি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ কথা বলতে রাজি হননি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি আব্দুস সালাম বলেন, রোহিঙ্গা আসছে। কিন্তু তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে নৌকার মাঝি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গত ২৪ আগস্ট থেকে কমপক্ষে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এ দিকে যেসব রোহিঙ্গা আসছে তাদের আপতত বিভিন্ন ক্যাম্পের আশপাশের খোলা স্থান ও পাহাড়ে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে। তাদের রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
রোহিঙ্গাদের পুরনো যেসব ক্যাম্প রয়েছে সেই ক্যাম্প সূত্র জানায়, পুরনো দুইটি রেজিস্টার্ড ক্যাম্প রয়েছে। এর একটি হলো টেকনাফ নয়া পাড়া এবং অপরটি কুতুপালংয়ে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ দুই ক্যাম্পে রয়েছে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা। দুইটি রয়েছে আনরেজিস্টার্ড ক্যাম্প। এর একটি কুতুপালংয়ের পাশে; যেখানে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। আর একটি ক্যাম্প রয়েছে টেকনাফের লেডায়। এ ক্যাম্পে রয়েছে দেড় লাখ রোহিঙ্গা। এ দিকে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরের পরে আরো ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সবমিলিয়ে এখন প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে