নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের বহনকারী গাড়িটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। এতে হামলা চালিয়ে ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, মুঠোফোন, ব্যাগসহ মালামাল কেড়ে নেওয়া হয়। এ সময় হামলাকারীদের ভেঙে ফেলা গাড়ির কাচে অন্তত দুজন আহত হয়েছেন।
গতকাল রোববার রাত দুইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই পথে বান্দরবানের লামার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন ছাত্রনেতারা।
ঘটনার সময় গাড়িটিতে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব আরিফ সোহেল; সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, মাহমুদা সুলতানা, রাকিব মোহাম্মদ, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রাহিম নীরব; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী। তাঁদের মধ্যে রাকিব মোহাম্মদ ও মাহমুদা সুলতানা আহত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, আজ সোমবার বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি স্মরণসভা ও মতবিনিময়ে অংশ নেওয়ার কথা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। ওই উদ্দেশ্যে গতকাল রাতে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল একটি গাড়িতে করে ঢাকা ছাড়ে। রাত দুইটার দিকে গাড়িটি মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় হামলার শিকার হয়।
হামলার সময় গাড়িতে ছিলেন রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি গতকাল রাত আড়াইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাড়িটি যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছিল। এরই মধ্যে চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা একদল লোক গাড়ির কাচ ভেঙে চালকের গলায় চাপাতি ধরে। হামলাকারী ব্যক্তিরা একপর্যায়ে গাড়িটির চারপাশ ঘিরে ফেলেন। তাঁরা চাপাতিসহ অন্য অস্ত্রের আঘাতে পুরো গাড়িটির কাচ ভেঙে আমাদের মুঠোফোন, টাকা, ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি কেড়ে নেন। তাঁরা আরিফ সোহেল ভাইকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ির বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হলে হামলাকারী ব্যক্তিরা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান।’
চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা একদল লোক গাড়ির কাচ ভেঙে চালকের গলায় চাপাতি ধরে। তাঁরা চাপাতিসহ অন্য অস্ত্রের আঘাতে পুরো গাড়িটির কাচ ভেঙে আমাদের মুঠোফোন, টাকা, ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি কেড়ে নেন। তাঁরা আরিফ সোহেল ভাইকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ির বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য
ঘটনাটিকে ছিনতাই উল্লেখ করে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল বারী আজ সোমবার ভোরে বলেন, ‘গাড়িটি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছিল। পাশেই আমাদের একটি টহল দল ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের টহল দলটি এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে আমরা ছিনতাইকারীদের ধরতে তৎপরতা শুরু করেছি।’
হামলার পর পর ছাত্রনেতাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ছাত্রনেতাদের একটি দল বান্দরবান ও আরেকটি দল ঢাকার উদ্দেশে সোনারগাঁও ছাড়ে।