ভৌগলিক

কুলাউড়া সীমান্তে বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা করলো ভারতীয়রা

কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা সীমান্তে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে আহাদ আলী (৩৪) নামের এক বাংলাদেশি যুবক খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর হয়নি। এরআগে গত রোববার সকালে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এওলাছড়া বস্তি এলাকার শূন্যরেখার কাছে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত আহাদ আলী মুরইছড়া এলাকার এওলাছড়া পুঞ্জির বাসিন্দা মৃত ইউসুফ আলীর  ছেলে। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী জমিরুন নেছা বাদী হয়ে রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কুলাউড়া থানায় ভারতীয় নাগরিক হায়দর আলীকে প্রধান করে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী রয়েছেন আরো ৪-৫ জন। মামলার আসামীরা হলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকোটি জেলার গজাটিলা থানার পূর্ব ইরানী এলাকার বাসিন্দা মৃত ইয়ামির আলীর ছেলে হায়দর আলী, হায়দর আলীর ছেলে করিম আলী, দেওয়ান আলীর ছেলে রওশন আলী ও জমির আলী, সাহেব আলীর ছেলে গফফার আলী। মামলায় বাকি দুই আসামি হলেন বাংলাদেশী। 

জানা গেছে, কর্মধা ইউনিয়নের এওলাছড়া পুঞ্জির বিপরীতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গজাটিলা থানা পড়েছে। ওই থানার পূর্ব ইরানী এলাকায় নিহত যুবক আহাদ আলীর শ্বশুরবাড়ি। সেখানে ভারতের কাঁটাতারের বাইরে আহাদের শ্বশুর জাবিদ আলীর কিছু জমি রয়েছে। হায়দর আলী নামের ভারতের এক নাগরিক ওই জমি বর্গা নিয়েছেন। কিন্তু হায়দর বর্গা নেয়ার টাকা পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে আহাদ আলীর সঙ্গে হায়দর আলীর বিরোধ চলছিল। এর জেরে হায়দার রোববার দুপুরের দিকে আহাদকে সীমান্তের শূন্যরেখায় ডেকে নেন। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে হায়দর ও তাঁর সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহাদের মাথা ও হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আহাদকে উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সারমিন ফারহানা জেরিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে আহাদের মৃত্যু হয়। নিহত আহাদআলীর চাচা আলী হোসেন জানান, পরিকল্পনা করে হামলা করে আমার ভাতিজাকে হত্যা করা হয়। হামলার পর অভিযুক্ত হায়দর আলী কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে যান। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, বাংলাদেশী যুবক হত্যার ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক হায়দর আলীসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এজাহারভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছেন। নিহত আহাদ আলীর লাশ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ এস এম জাকারিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button