ইসলাম ধর্ম

তাহাজ্জুদ ও ইস্তিগফার এর ফজিলত; মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার চাওয়া অপুর্ন রাখেন না

এক লোক মসজিদে প্রবেশ করলো। মন খারাপ। এক পাশে গিয়ে বসে রইলো। এক জন বৃদ্ধ হুজুরও আরেক পাশে ছিলেন।
বৃদ্ধ হুজুর কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করলেন:
-বাছা! এখন তো নামাযের সময় নয়। তুমি কেনো মসজিদে এলে?
-হুজুর! আমি বিয়ে করেছি, বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো। এখনো আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে, আমাদের ঘরে নতুন কোনও মেহমান আসে নি। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই বেশ পেরেশান। সংসারে সন্তান না থাকাতে আমার স্ত্রীকে নানা জন নানা কথা বলে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সন্তান না দেয়ার ফায়সালা করলে, আমি সেটাতে রাজি। আমি আমার স্ত্রীকেও বারবার সান্তনা দিয়ে আসছি। আর সন্তান না হওয়াতো স্ত্রীর দোষ নয়। আমরা দুজনেই বিষয়টার সাথে সম্পৃক্ত।

মানুষের কটাক্ষ আর বিদ্রুপের কারণে অবস্থা এমন হয়েছে যে, আামার স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে, সে কিছুদিন পর পুরোপুরি পাগল হয়ে যাবে। রুবাবাহ, মানে আমার স্ত্রী, সে এতো ভালো একটা মেয়ে, তাকে ছাড়া আমার জীবনটাও পানসে হয়ে যাবে। জীবনের কোনও স্বাদ আমি পাবো না।

আমি কোনও ডাক্তার-বৈদ্য-কবিরাজ বাদ রাখিনি। কিছুতেই কিছু হলো না। বৃদ্ধ হুজুর বললেন:
-তুমি স্থির হয়ে বসো। আমি তোমাকে একটা ওষুধ দেবো। ওষুধটার ব্যবহারবিধি খুবই কঠিন। তবে আমি আল্লাহর ওপর পুরোপুরি তাওয়াক্কুল করেই বলছি। এ ওষুধে তোমার অবশ্যই সন্তান হবে। ইনশাআল্লাহ।
-আল্লাহর দোহাই লাগে হুজুর! আপনি যত কঠিন আর কষ্টকর ওষুধই দেন, আমি সেটা ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ
-তোমরা দুজনেই, ফজরের আযানের কমপক্ষে একঘণ্টা ঘুম থেকে উঠবে। সময়টাকে দুইভাগে ভাগ করে নিবে।
=প্রথম ভাগে কিয়ামুল লাইল অর্থাত তাহাজ্জুদ পড়বে।
=দ্বিতীয় ভাগে ইস্তিগফার পড়বে।
এভাবে নিয়মিত আমল করে যাবে।

কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“ আর আমি বললাম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তিগফার করো, নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল। (এর ফলে) তিনি তোমাদের ওপর প্রবল বর্ষণ করবেন, আর তিনি তোমাদেরকে সম্পদ, সন্তান দ্বারা সাহায্য করবেন। আর তোমাদের জন্য বানিয়ে রাখবেন বাগ-বাগিচা। আর তোমাদের জন্য প্রবাহিত করবেন নদীনালা”। সূরা নূহ।

লোকটা ঘরে ফিরে গেলো। স্ত্রীকে বললো:
-ওগো! আল হামদুলিল্লাহ, অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন।
-কিভাবে?
স্বামী বিষয়টা খুলে বললো। জিজ্ঞাসা করলো:
-তুমি কি এই আমল করতে প্রস্তুত?
-জ্বি, আমি অবশ্যই প্রস্তুত। আপনার সাথে কোন কাজেই বা আমি অপ্রস্তুত থাকি? আমরা কোন দিন থেকে আমলটা শুরু করবো?
-কেনো আজ থেকেই, কোনও ওযর আছে তোমার?
-জ্বি না।
তারা দুজনেই আমলটা শুরু করলো। পনের দিন যেতে না যেতেই স্ত্রীর মধ্যে গর্ভের বিভিন্ন উপসর্গ প্রকাশ পেতে শুরু করলো। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর তিনিও বিস্মিত হয়ে বললেন:
-আপনাদের জন্য তো সুখবর আছে।

এটা ছিলো ইস্তিগফারের বরকত। কুরআনের আয়াতটাতে তো আল্লাহ তা‘আলা এমনটাই ইঙ্গিত করেছেন।

ইয়া আল্লাহ, আমাদেরকে বেশি বেশি ইস্তিগফার করার তাওফীক দান করুন। আমীন

~শায়েখ আতিক উল্লাহ হাফি.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button