অর্থনীতিমানব সম্পদ

মেক্সিকোর শ্রমবাজারে বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি বাড়ানো হবে : মুশফিকুল ফজল

মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে গতকাল রবিবার ‘মিট দ্য এম্বাসেডর’ শীর্ষক এক মতবিনিময় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জনাব মুশফিকুল ফজল আনসারী প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

দূতাবাসের হেড অফ চ্যান্সারি আব্দুল্লাহ আল ফরহাদের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী উল্লেখ করেন যে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাঁর সময়ে দুতাবাসটি একটি জনবান্ধব মিশন হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।তিনি পিপল টু পিপল কানেকশন বা জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বাগতিক দেশের নিয়ম-কানুন মেনে চলার আহ্বান জানান এবং মেক্সিকোর পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। তিনি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।মেক্সিকোর শ্রমবাজারে বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি—বিশেষ করে আইটি, কৃষি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য পেশাজীবী খাতে কাজের সুযোগ তৈরির জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করে তৈরি পোশাক, ওষুধ রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা চামড়াজাত পণ্য, আইটি সেবা এবং কৃষি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হবে। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জুলাই গণভূথানে জীবন আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণ করে বলেন, তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি কখনো ভুলবেনা। রাষ্ট্রদূত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

তিনি ফ্যাসিবাদের বিচারে আইনানুগ প্রক্রিয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ গুম ও খুনের রাজ্য হিসেবে পরিচিত হয়েছিল। কিন্তু এখন সময় এসেছে সেই অধ্যায় পেছনে ফেলে বাংলাদেশকে একটি সুশৃঙ্খল, সভ্য ও উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার।’ রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমরা গর্বিত যে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন। নিশ্চিতভাবেই তিনি জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগনের মালিকানা প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবেন।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশ কয়েকজন সদস্য বক্তব্য রাখেন এবং রাষ্ট্রদূতকে তার নতুন দায়িত্বের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে তার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। অনুষ্ঠানের শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খাবারে আপ্যায়ন করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button