রাজনীতি

কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন, তাঁরা রাজনীতিবিদদের সম্মান করতে জানেন না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘হাসিনা যে পিটান পিটিয়েছে, এইটা যখন সহ্য করতে পারছি, তার ১০০ ভাগের ১ ভাগ পিটুনি দেওয়ার ক্ষমতা আপনাদের নাই। যদি থাকত, তাহলে বুলডোজার দিয়ে এসব অপকর্ম হতো না।

এতে কী মনে হয়, দেশে পুলিশ আছে, মনে হয় কোনো প্রশাসন আছে, মনে হয়? মনে হয় না। যদি একবার জনগণ হাতে আইন তুলে নেয়, সেই সমাজ, সেই রাষ্ট্র পরিচালনা করবে কে? এই কথা কি একবার ভাবছেন? কেন ভাবেন নাই? যেই কাজটা ফজরের নামাজের সময় করার কথা, সেই কাজটা যদি মাগরিবের নামাজের সময় করেন, তাহলে তো সঠিক সময়ে করা হইল না। যেইটা আপনি ৫-৬-৭-এর মধ্যে শেষ করতে পারতেন, এইটা তিন মাস পরে চেতনা নতুন করে জাগল কেন? নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র আছে, নিশ্চয়ই অন্য কোনো খাতে নেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি আছে।’

আজ বুধবার বিকেলে লালমনিরহাট জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথাগুলো বলেন। লালমনিরহাট শহরের রেলওয়ে স্টেশন রোডের রেলওয়ে মুক্তমঞ্চ মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তাঁর বক্তব্যে বলেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন জুলাইয়ে শুরু করেছিলেন। বিএনপি এটা সমর্থন করেছিল। এতে প্রমাণ হয়, বিএনপি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে কখনো ভুল করে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘দেশের এই যে অবস্থা, এখন আন্দোলন হলো না কেন? আমরা আন্দোলন করছি না কেন? কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করব? আন্দোলনটা কতটুকু মানানসই। কারণ, এই সরকারের দায়িত্ব একটা নির্বাচন করা, কিন্তু তারা নির্বাচনের ব্যাপারেও নাই, সরকার পরিচালনার দিকেও খেয়াল নাই। সকাল-বিকাল আমরা জারিগান শুনছি, সংস্কার সংস্কার। আমাদের দেশে কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন, তাঁরা সরকারকে কোনো ভালো বুদ্ধি দেন না। তাঁরা রাজনীতিবিদদের সম্মান করতে জানেন না। তাঁদের কাজের জন্য কয়টা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। শুনলাম, সেই কমিশনের যে সুপারিশ গেছে, তার সংখ্যা ৬২০, যা নিয়ে কাজ করতে ছয় মাস লাগবে। তারপর তাঁরা ভাববেন, কোনটা গ্রহণ করবেন, কোনটা করবেন না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার, নিরপেক্ষ সরকার, আপনারা যদি বিপরীত কর্মকাণ্ড করেন, তাহলে তো আপনাদের নিরপেক্ষ সরকার বলতে পারব না। ছাত্রদের সরকারে থেকে দল গঠনের মাধ্যমে আপনারা আপনাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন বা হারাতে যাচ্ছেন। যেই পক্ষটা জনগণের পক্ষ, জনগণ তো তখন আর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টাকে বলব, আপনি আন্তরিকতার সঙ্গে আইনের শাসন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণকে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের কাজে সহায়তা করুন। কারণ, আন্দোলন হয়েছে এক দফার—ফ্যাসিবাদের পতন। কেন? একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। আমরা যার যার ভোট সে সে দেব, আমরা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেব, দিনের ভোট দিনে দেব, রাতে দেব না। বিগত ১৬ বছরে কিসের জন্য আন্দোলন? কেন এত বড় শহীদের তালিকা? কত বাবার বুক খালি হলো, কত মায়ের সন্তান হারাল? ১৭ বছর এই দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। সেই ভোটটা আপনার নেতৃত্বে দেখতে চাই, জনগণের মনে যে আশঙ্কা রয়েছে, সেই আশঙ্কা মুক্ত করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button