বৈশ্বিকরাজনীতি

বিশ্বায়নে ট্রাম্প ও ট্রাম্পইজম কেন অপরিহার্য?

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

বিগত জানুয়ারী ২০, ২০২৫ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পরবর্তীতে মার্কিন সিনেটে মার্কো রুবিও ও তাঁর অনুমোদন শুনানিতে বলেন- “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বৈশ্বিক ব্যবস্থায় এখন শুধু অপ্রাসঙ্গিকই নয়, এটি এখন আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে”।

সালজবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল ফিলোসফি বিভাগের স্কলার মার্ক এস. ওয়েনার তাঁর এক নিবন্ধে “ট্রাম্পিইজম এন্ড দ্য ফিলোসফি অফ হিস্টোরিতে উল্লেখ করেন- আমেরিকা উইল আইদার কলাপ্স অর বি মেইড গ্রেট অ্যাঁগেইন অর্থাৎ আমেরিকা ধ্বংস হবে কিংবা নতুন করে আবার গড়ে উঠবে”

যদি আমেরিকা তাঁর বৈশ্বিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভারসাম্য অবস্থায় বর্তমান প্রজন্মের নিকট ধরে রাখতে পারে তাহলে আমেরিকা রিঅ্যাঁগেইন কিংবা গ্রেট অ্যাগেইন হয়ে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। কিন্তু আরো আশংকা রয়েছে আমেরিকা শীর্ষ পরাশক্তি ও শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হিসেবে যদি তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বুদ্ধিমত্তার যথাযথ প্রয়োগ কিংবা বাস্তবায়ন সফলতার দিকে যদি অগ্রগামী থাকে, তাহলেই আজকের বিশ্বায়নে তাদের অবস্থান ভারসাম্য অবস্থায় রাখতে পারবে।আজকের বিশ্বে সকলেই আমেরিকার স্তাবক হিসেবে অবস্থান ধরে রাখবে, যদি সেই বিজয়ী আমেরিকা গড়ে তোলাযায়।আবার যদি কোনো কারণে রাজনৈতিক নেতৃত্বের বৈশ্বিক ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারে, তাহলে সকলেই আমেরিকা বিরোধী হয়ে যাবে। ট্রাম্পের আমেরিকাই আসল আমেরিকা। ট্রাম্প আমেরিকার বিজয়ের প্রতীক।আমরা লক্ষ্য করলাম বিগত নভেম্বর ০৫, ২০২৪ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ভূলত্রুটির উর্ধ্বে নয়। কিন্তু আমেরিকার সামগ্রিক জীবন-যাপন ব্যবস্থায় ট্রাম্পই বিজয়ী। কারণ, ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর পূর্ব পুরুষ অস্ট্রিয়া-যা বর্তমান জার্মানীর অভিবাসী হলেও ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদ।অতঃপর, ৪৫তম ও ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজে জীবন-যাপন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত জীবনে উল্লেখযোগ্য ভুলত্রুটি থাকলেও আমেরিকানরা তাকে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছেন। একদিকে আমেরিকার অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করা অন্যদিকে মার্কিন গণতন্ত্রের অভিজাত দ্বারা বজায় রাখা।যেখানে আমেরিকান জনগণ তাদের রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত সকল গণতান্ত্রিক অধিকার সমূহ বিশেষতঃ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকল নাগরিক সুবিধাদি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি বেশী আস্থাশীল।আর তাঁর প্রতি অধিকতর আস্থাশীল ছিল, আছে কিংবা থাকবে বলেই ট্রাম্প আমেরিকার বিজয়ের প্রতীক।বিশ্বে যখন দুই দুটি যুদ্ধ চলমান ঠিক তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসলেন। তাঁর এই ফিরে আসাও আবার ইতিহাসের অংশ।অতঃপর, তিনি যখন শপথ নিলেন তখন ইসরায়েল গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় কার্যকর হয়।এমনকি সর্বশেষ বিশ্ব গণমাধ্যম সূত্রও বলেছে-ইসরায়েল গাজা যুদ্ধে স্থায়ী সমাধানের দিকের ইঙ্গিত।এ প্রসঙ্গে আগামী রবিবার হোয়াইট হাউজের ইসরায়েল গাজা ইস্যু নিয়ে ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই রাষ্ট্র কেন্দ্রিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করবেন। আর এ মূহুর্তে ঐ দুই রাষ্ট্র কেন্দ্রিক সমাধান ছাড়া অন্য কোন বিকল্প ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজাবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের চুক্তির মাধ্যমে সমাধান করার প্রতি জোর দিলেন মার্কিন প্রেসিন্ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেকোনো সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের সমাধানকল্পে আলোচনা হতে পারে।এক কথায়, ট্রাম্প যত দ্রুত যুদ্ধের সমাধান করবে তত দ্রুতই আমেরিকার রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভারসাম্য, তেজ, মহিমা, ও গৌরব বাড়বে নিঃসন্দেহে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button