রাজনীতি

সামনে গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করা যেতে পারে: নাহিদ ইসলাম

রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতার কবর জিয়ারত করেন নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

সামনে গণপরিষদ এবং সংসদ নির্বাচন একই সঙ্গে করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, এতে দেশের পুরোনো শাসনকাঠামো, সংবিধান পরিবর্তন করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে।

আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতার কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন একটি সংবিধান প্রকৃত গণতন্ত্রে উত্তরণ হতে আমাদের সহায়তা করবে। আমরা বলছি, সামনের যে নির্বাচন সেটা একই সঙ্গে গণপরিষদ এবং সংসদ নির্বাচন আকারে করা যেতে পারে। এইটার ফলেই কেবলমাত্র আমাদের পুরোনো শাসনকাঠামো, সংবিধান পরিবর্তন করে আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব।’

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যে গণহত্যা, শেখ হাসিনা সরকারের যে ফ্যাসিবাদী দমন-পীড়ন ছাত্র-জনতার ওপর নেমে এসেছিল, আমরা অবিলম্বে তার বিচার দেখতে চাই। এই বিচারের মধ্য দিয়েই আসলে এই শহীদদের ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব। এর মধ্য দিয়েই এ দেশে যে স্বৈরতন্ত্র সংগঠিত হয়েছিল সেটি যাতে পুনরায় আর না হতে পারে, কোনো জালেম যাতে গণহত্যা করার আগে ভাবে, এমন কঠোর বিচার হওয়া উচিত। এই বিচার পৃথিবীর ইতিহাসে যেন নিদর্শন হয়ে থাকে। সরকারের কাছে দাবি জানাই, বিচার কার্যক্রম যেন দ্রুত দৃশ্যমান হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক কাজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর জন্য আমরা প্রথমে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছি, তারপরে রায়েরবাজার কবরস্থানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যে বীর শহীদেরা রয়েছেন, আমরা তাঁদের প্রতি এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেছি।’

নাহিদ বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই মাসে স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে যে গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশের শত শত ছাত্র, তরুণ, শ্রমিক জীবন দিয়েছেন, নানান পেশার মানুষসহ পাবলিক, প্রাইভেট, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে আত্মত্যাগ করেছেন। এ ছাড়াও শ্রমিক, কৃষক, রিকশাচালক যাঁরা আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। যে আকাঙ্ক্ষা থেকে আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম, তা যেন আমরা ধারণ করতে পারি—সেই আকাঙ্ক্ষা থেকে আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করছি।’

এ সময় দলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘যে হাসিনার নির্দেশে এতগুলো হত্যা করা হলো, সেই খুনের বিচার না দেখা পর্যন্ত কীভাবে এ দেশের মানুষ ভিন্ন কিছু চিন্তা করে। খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে হবে, বিচারের মঞ্চে দাঁড়াবে, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো মানুষ, কোনো রাজনৈতিক দল ভুল করেও যেন অন্য কোনো কিছু চিন্তা না করে। যত দিন না আমরা খুনি হাসিনাকে ওই ফাঁসির মঞ্চে না দেখছি তত দিন এই বাংলাদেশে কেউ যেন নির্বাচনের কথা না বলে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button