বৈশ্বিক

নির্যাতনে দিশেহারা পৃথিবী তান্ডব লীলা থামবে কবে: সবুজ আন্দোলন

সারা বিশ্ব জুড়ে পুঁজিবাদী ধনতন্ত্রের কারসাজিতে পৃথিবী আজ দিশেহারা। আক্ষরিক অর্থে প্রচলিত একটি কথা আছে “হে আল্লাহ আমি কষ্টে দিশেহারা” কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টি পৃথিবী মনুষ্য সৃষ্টি দ্বারা দিশেহারা। পরিবেশ বিপর্যয়ের নেতিবাচক প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্তন তাণ্ডবে পরিণত হয়েছে। অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে উন্নত রাষ্ট্রগুলো তাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করার প্রতিযোগিতায় উন্মাদ হয়ে গেছে। অথচ পবিত্র কোরআনের আল্লাহ তালা সূরা রুমের ৪১ নম্বর আয়াতে বলেছেন “জলে স্থলে সমস্ত বিপর্যয় মানুষের দু’হাতের কামাই”। পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য প্রতিবছর ২২ এপ্রিল বিশ্ব ধরিত্রী দিবস পালন করা হয়ে থাকে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের শক্তি, আমাদের পৃথিবী’।

পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে:

সারা পৃথিবী জুড়ে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করা। ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ অর্ধেক এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলোকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করে সারা পৃথিবী জুড়ে উন্নত রাষ্ট্রগুলো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত করা।

অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা তৈরি করা। পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং জলে ও স্থলে পরীক্ষামূলক সম্প্রচার বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করে পাট জাত পণ্য ও পচনশীল পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করা।

মাটি ও পানির দূষণ রোধে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গবেষণা জোরদার করতে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং জৈব সারের ব্যবহার নিশ্চিত করা।

বিশ্বব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার পাশাপাশি বৃক্ষ কর্তনে বিধি নিষেধ জোরদার করতে হবে।

জলজ প্রাণী সংরক্ষণে সমুদ্র, নদী, জলাধার ব্যবহারে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণ করা। প্রবাহমান নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।

বায়ু ও শব্দ দূষণ রোধে বিশ্বব্যাপী সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং পরিবেশ সম্মত যানবাহন উদ্ভাবনে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো কে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা।

মাদক এবং তামাক জাত পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার কমাতে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং ধর্মীয় বিধি নিষেধ মেনে চলতে রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্দেশনা প্রদান করা।

আগামী প্রজন্মের নিরাপদ পৃথিবী নিশ্চিতে ধরিত্রী বাঁচাতে মানবিক পৃথিবী গড়ে তুলি। যেখানেই পরিবেশ বিপর্যয় সেখানেই প্রতিবাদ গড়ে তুলি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button