অবিশ্বাস্য সম্পদের মালিক দুধ ফেরিওয়ালা মামুন মেম্বার!

আবুল হোসেন সিকদার, মুন্সীগঞ্জ থেকেঃ ‘দুধ ফেরিওয়ালা’ নামে পরিচিত মো. আল-মামুন প্রধান এখন কোটিপতি “ভূমিদস্যু মামুন মেম্বার” হিসেবে এলাকাজুড়ে আলোচিত। মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার চরবাউশিয়া ফরাজীকান্দি গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান মামুন, এক সময় জীবনধারণ করতেন বাড়ি বাড়ি ঘুরে দুধ ফেরি করে। অথচ বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার এবং অঢেল সম্পদের মালিক—বসতভিটা, বিলাসবহুল গাড়ি, একাধিক জমি ও গজিয়ে ওঠা ‘রাজপ্রাসাদ’ যার প্রমাণ।
আবাসন ব্যবসার নামে জমি দখলের অভিযোগ
স্থানীয়দের অভিযোগ, গজারিয়ায় বিভিন্ন আবাসন কোম্পানি জমি কেনা শুরু করলে মামুনের ভাগ্যবদল ঘটে। জমির প্রকৃত মালিকদের ভয়ভীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামমাত্র দামে জমি নিয়ে আবাসন কোম্পানির কাছে মোটা অঙ্কে বিক্রি করেন তিনি।
একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তিনি সাধারণ মানুষের সেবক হওয়ার বদলে অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণের জমি দখলে নিচ্ছেন।
নিরীহ পরিবারকে জমি থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ
সর্বশেষ অভিযোগ উঠেছে ফরাজীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হান্নানের ছেলে মো. রাসেলের পরিবারের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, ৭১২ খতিয়ানের আরএস-৭৪৮০ দাগের ৮ শতাংশ বসতবাড়ির জমি সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দখল করে নিয়েছেন মামুন মেম্বার। জমির চারপাশে ইতোমধ্যে ইটের দেয়াল দিয়ে ঘিরে রেখেছে তার লোকজন।
ভুক্তভোগী রাসেল বলেন,
“আমার বাবার ক্রয়কৃত জমি জোর করে দখল করে নেওয়া হয়েছে। আমরা কিছু বললেই মারধরের হুমকি দেওয়া হয়। নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ২০১৭ সালে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার পাইনি।”
জনমনে আতঙ্ক, প্রশাসন নীরব?
স্থানীয়রা জানান, মামুন মেম্বারের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ বা প্রশাসন। বরং অভিযোগ করলেই মামলা, হামলা কিংবা ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকার মানুষকে চুপ করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
রাজনীতি ও ছত্রছায়া
অভিযোগ রয়েছে, একসময় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় মামুন পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা ভোগ করে চলেছেন। তার এই রাজনৈতিক রঙ বদল ও অর্থবিত্তের দাপটে স্থানীয় দশ গ্রামের মানুষ আজ আতঙ্কের মধ্যে বাস করছেন।
যোগাযোগ করলে কথা বলতে রাজি হননি
এই বিষয়ে অভিযুক্ত মামুন মেম্বারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
ভুক্তভোগীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন চলবে…