যাকাত লিগ্যাল এইড থেকে কিভাবে সহযোগিতা পাবেন এবং কারা পাবে

আমাদের কথা
ইসলামের মৌলিক ৫টি স্তম্ভের মধ্যে যাকাত ৩য় স্তম্ভ। সচ্ছল মুসলিমদের জন্য তাহাদের উদ্বৃত্ত নগদ টাকা গহনাসহ অন্যান্য সম্পত্তি পরিমাণ যদি নেসাব পরিমাণের বেশী থাকে অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার বাজার মূল্যের বেশী সঞ্জিত থাকলেই তাকে উক্ত সম্পদের শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত দিতে হইবে। নেসাব এর চাইতে কম সম্পদ থাকিলে তাহার জন্য যাকাত ওয়াজিব হইবে না।
যাকাত যেমন তেমন ভাবে দিলেই আদায় হইবে না। যাকাত আদায়ের ৮টি খাত আল্লাহ তায়ালা নির্দিষ্ট করিয়া দিয়েছেন। এই খাতের বাহিরে অন্য কোন খাতে যাকাতের টাকা প্রদান করিলে উহাতে যাকাত আদায় হইবে না। উহা দান হিসেবে গণ্য হইবে। আর কোন ধনী মুসলিম তার প্রদত্ত যাকাত বর্ণিত আটটি খাতের বাহিরে প্রদান করিলে উহাতে তাহার যাকাত আদায় হইবে না। বরং সে যাকাত অনাদায়ী হিসাবে রোজ হাশরের শেষ বিচারে তাহার অর্জিত নেকি হইতে পরিশোধ করিতে হইবে।
ডা. নাহার এন্ড ডাঃ আনোয়ার যাকাত লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন যাকাতের আটটি খাত হইতে দুইটি খাত অনুসরণ করিয়া অত্র ফাউন্ডেশন স্থাপন করা হইয়াছে। যাকাতর তৃতীয় শর্ত আল আমালীন। ইহাতে বলা আছে যাহারা যাকাত নিয়ে কাজ করিবে তাহাদের বেতনের টাকা যাকাতের অর্থ হইতে দেওয়া যাইবে। ইহাতে যাকাত আদায় হইয়া যাইবে। যাকাতের ৫ নং শর্ত আর রিকাব ইহাতে বলা হইয়াছে যাকাতের অর্থে যুদ্ধবন্দী ও ক্রীতদাসদের মুক্ত করা যাইবে। ইহাতে যাকাত আদায় হইয়া যাইবে। বর্তমানে যুদ্ধবন্দী নাই বলিলেই চলে। তবে বিভিন্ন দেশে দরিদ্র মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রচুর লোক জেল বন্দী হিসাবে মামলা পরিচালনা করিতে অক্ষম হওয়ায় অসহায়ভাবে বিনা বিচারে জেলে আটক হইয়া রহিয়াছে। হত দরিদ্র এই সব জনগোষ্ঠী আর্থিক সমস্যার অভাবে জেল হইতে মুক্তি পাইতে পারিতেছেনা। ফলে সে নিজে যেমন শাস্তি পাইতেছে অপরদিকে তার নিজের পরিবারও আয়ের মানুষ জেলবন্ধী থাকায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাইতে বাধ্য হইতেছে।
সারা বিশ্বে ধনী মুসলিম সম্প্রদায় যদি আন্তরিকভাবে আল কোরআনের নির্দেশ পালন করিয়া নির্দেশিত আটটি খাতে যাকাত পরিশোধ করে তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ইসলামী সমাজে দরিদ্র জনগণের কোন অস্তিত্ব থাকিবে না।
আমাদের যাকাত ফাউন্ডেশন হতদরিদ্র মুসলিম জেল বন্দীদের মুক্তি ও আইনি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে অভিযুক্তের অভিযোগের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি ভূমিকা রাখিতে উদ্যোগ নিয়েছে। যাকাতের নীতি অনুযায়ী আমাদের প্রতিষ্ঠান কোন আসামীর পক্ষে সমর্থন করিলে তাহার মামলা পরিচালনায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট হইতে সুপ্রিম কোর্টের এপিলেট ডিভিশন পর্যন্ত তাহার পক্ষে মামলা পরিচালনা করিয়া হয় খালাস কিংবা জেল বহাল পর্যন্ত পরিচালনা করিবে। জজ কোর্টেই সমাপ্ত করিবে না। অর্থাৎ যাকাতের নীতি অনুযায়ী সাহায্যকারীকে সম্পূর্ণ সাহায্য করার যে বিধান রহিয়াছে আমাদের যাকাত ফাউন্ডেশন উক্ত নীতি অনুযায়ী যথাযথভাবে পালন করিবে। ফলে আসামি বা তার পরিবার মামলা পরিচালনায় নিশ্চিন্ত থাকিতে পারিবে।
আমরা শুধু জেলবন্দীদেরই নয় যাহারা দারিদ্রতার কারনে কোন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া স্বত্বেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিতেছেনা, আমাদের প্রতিষ্ঠান তাহাদের পক্ষেও মামলা দায়ের ও পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করিবে। বিশেষ করিয়া বস্তিবাসী হতদরিদ্র অশিক্ষিত মহিলারা স্বামী ও সামাজিকভাবে নানা কারণে অত্যাচারিত বা নিগৃহীত হয়। তাহাদের প্রতিবাদ করার ইচ্ছা থাকিলে অজ্ঞতা ও আর্থিক সমস্যা থাকার কারণে তাহারা কোন প্রতিকার পায় না। যাকাত ফাউন্ডেশন তাদেরও পূর্ণ আইনি সহায়তা প্রদান করিবে।
আমাদের এই উদ্যোগ সম্ভবত বাংলাদেশে সর্ব প্রথম। বিশ্বের অন্য কোন মুসলিম দেশে এখনো কেউ যাকাত অর্থে হত দরিদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আইনি সহায়তা প্রদানের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে নাই বলিয়া জানা যায়। যদি এই উদ্যোগটি অন্যান্য দেশে ছড়াইয়া দেওয়া যায় তবে অর্থের অভাবে সেই সব দেশের জেলবন্দি কিংবা আইনের বিচার প্রত্যাশা হতদরিদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠী নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়ভাবে সচেষ্ট হইতে পারিবে। ফলে সমাজে দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার উৎপীড়ন আশানুরুপভাবে কমিয়া যাইবে বলিয়াই আমরা মনে করি।
আমাদের নিকট হইতে আইন সহায়তা পাওয়ার নিয়মঃ
১. সহায়তা প্রার্থী বা আবেদনকারী প্রথমে যাকাত ফাউন্ডেশনের হেড অফিসে বা শাখা অফিসে নাম নিবন্ধন করাইয়া একটি ফর্ম গ্রহণ করিতে হবে। সেই ফর্ম অনুযায়ী আবেদনকারী/কারীনী বাহিরে বসবাস রত তাহার নিজ কাউন্সিলার /মেম্বার/চেয়ারম্যান এর প্যাডে ফাউন্ডেশনের নমুনা অনুযায়ী সে যাকাতের টাকা পাওয়ার অধিকারী সেই মর্মে একটি প্রত্যায়ন পত্র আনিবে। যাহাকে কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান সে তার এলাকায় বসবাস করে এবং তাকে সে ব্যক্তিগত ভাবে জানে, সে যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত। এই প্রত্যায়নপত্র পাওয়ার পর দরখাস্তকারীকে ডাঃ নাহার এন্ড ডাঃ আনোয়ার যাকাত লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন এর একটি ফর্ম পুরন করিয়া অফিসে জমা দিতে হইবে।
এই কাজ শেষ করার পর ফাউন্ডেশন মামলাটি তাদের নিযুক্ত প্যানেল ল ইয়ার একজনকে নির্বাচিত করিয়া মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দিবে। নির্বাচিত আইনজীবী মামলাটির বিষয়ে প্রতিমাসে অন্তত একবার মামলাটির অবস্থা রিপোর্ট আকারে হেড অফিসে বা আঞ্চলিক অফিসে জমা দিবে। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা হারিয়া গেলে নিযুক্ত আইনজীবী সর্বশেষ অবস্থা জানাইয়া আপিলের কোন সুযোগ থাকিলে উহা উল্লেখপূর্বক শেষ রিপোর্ট দিবে। ফাউন্ডেশন তখন মামলাটির আপিল করিবে। এইভাবে জেলা কোর্ট শেষ হইলে মামলাটি হাইকোর্টে যাওয়ার অবস্থা থাকিলে ফাউন্ডেশনের হাইকোর্টের প্যানেল আইনজীবী হইতে একজনকে মামলা ফাইল করার দায়িত্ব দেয়া হইবে। হাইকোর্ট হারিয়া গেলে সুযোগ থাকিলে ফাউন্ডেশন মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের এপিলেট ডিভিশনে সর্বশেষ চেষ্টা চালাইবে। এখানে আসামি মুক্তি পাইলে সে মুক্ত হইবে। আর সাজা বহাল থাকিলে ফাউন্ডেশন সেখানেই আইনি কার্যক্রম বন্ধ করিবে। অর্থাৎ ফাউন্ডেশন যে মামলা গ্রহণ করিবে উহার শেষ পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়
ড:শাহরেইয়ার মমতাজ-উল মূলক
মহাসচিব
০১৭৪৬-৮৮৭৬৫৮
ডাঃ নাহার এন্ড ডাঃ আনোয়ার যাকাত লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন
৬৯/বি, ধানমন্ডি আ/এ, সড়ক ৬/এ ঢাকা।
মতিঝিল অফিস
এস এম মোরশেদ
০১৯১১-৩৮৫৯৭০
৭৮ মতিঝিল ৭ম তলা ঢাকা।
লক্ষীপুর কার্যালয়
মুনছুর আহমেদ (দুলাল)
এডভোকেট, জজকোট, লক্ষীপুর
০১৭১৯-১৪১৭৩৪, ০১৬৮৫-০৭৭৪৭১
অসহায়দের জন্য ফ্রী মামলা পরিচালনা করা হয়।