বৈশ্বিক

মুসলিম বিশ্ব বিজ্ঞান প্রযুক্তি তে পিছিয়ে থাকার একটি কারণ হলো ই-স-রা-ই-ল-এর গোয়েন্দা সংস্থা মো-সা-দ মুসলিম বিজ্ঞানীদের হত্যায় সর্বদা তৎপর সংস্থাটি

বিশেষ প্রতিবেদনঃ সারা বিশ্বে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে গত ৭০ বছর ধরে গুপ্তহত্যা মিশন চালাচ্ছে ই-স-রা-ই-ল-এর গোয়েন্দা সংস্থা মো-সা-দ। বিভিন্ন দেশে নানা কৌশল ব্যবহার করে ২,৭০০টির বেশি হত্যা মিশন চালিয়েছে দেশটি। টুথপেস্টে বিষ মিশিয়ে, পার্সেল বিস্ফোরণ, সশস্ত্র ড্রোন, গাড়ি বোমা হামলা ও স্নাইপার দিয়ে গুলি করা সহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনে এসব হত্যা মিশন পরিচালিত হয়। প্রমাণ ছাড়াই রহস্যজনকভাবে হত্যা করতে এবং এসব ইস্যু যেনো আন্তর্জাতিক লেভেলে না উঠে তাই এসব কৌশল অবলম্বন করা হয়। এই নৃশংসতার শিকার হয়েছে অনেক মুসলিম বিজ্ঞানীরা। এমনকি মুসলিম দেশগুলোয় বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করা অমুসলিম বিজ্ঞানীরাও শিকার হয়েছে।

প্রতিপক্ষরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী যারা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বিভিন্ন প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে তাদের ও জনপ্রিয় মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের হত্যার জন্য এসব কৌশল নিয়মিত প্রয়োগ করে আসছে ই-স-রা-ই-ল। দেশটির জাতীয় দৈনিক ইয়েদিয়ত আহারোনটের গোয়েন্দাবিষয়ক প্রতিনিধি রনিন বার্গম্যান তার লেখা নতুন বইয়ে এমন দাবি করেছেন। বইটিতে ই-স-রা-ই-লি গোয়েন্দা সংস্থা মো-সা-দ, শি-ন বে-ত ও সেনা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার রয়েছে।

এক হাজার সাক্ষাৎকার ও কয়েক হাজার নথির উল্লেখ করে ৬ শতাধিক পৃষ্ঠার “রাইজ অ্যান্ড কিল ফাস্ট : দ্য সিক্রেট হিস্টোরি অব ই-স-রা-ই-ল’স টার্গেটেড অ্যাসোসিয়েশনস’ নামের বইটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, ই-স-রা-ই-ল যুদ্ধের পরিবর্তে গুপ্তহত্যা চালায়। ইরানে সামরিক অভিযান না চালিয়ে দেশটির প্রায় আধা ডজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে।

ই-স-রা-ই-ল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে বিজ্ঞানী হত্যার শুরুটা সম্ভবত হয়েছিল ড. আলী মুস্তফা মোশারফা পাশাকে দিয়ে ।
১। ১৯৫০ সালে ১৫ ই জানুয়ারি বিজ্ঞানী আলী মুস্তফা পাশাকে হত্যা করে মো-সা-দ । উনাকে আইনস্টাইন জিনিয়াস বলেছিলেন । “কোয়ান্টাম থিওরি” এবং “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” তে উনার অনেক কাজ রয়েছে। অনেক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল তার, লিখেছিলেন অনেক বই। কিন্তু তিনি রহস্যজনক ভাবে গুপ্তহত্যার শিকার হোন যা ছিল আরবের প্রতিথযশা বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে মো-সা-দের মিশনের অংশ ।

২। ১৯৫২ সালের ৫ ই আগষ্ট মিসরীয় পরমাণু বিজ্ঞানী সামিরা মুসাকে যুক্তরাষ্ট্রে এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে হত্যা করা হয়। বিজ্ঞানী সামিরাকে ‘”মাদার অফ এটমিক এনার্জি” বলা হতো। এই নারী বিজ্ঞানীকে ই-স-রা-ই-ল-এর পছন্দ না করার কারণ তিনি মধ্যপ্রাচ্যে ই-স-রা-ই-ল-এর ক্রমবর্ধমান পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন। এছাড়া তিনি ইউরেনিয়ামের চেয়ে কম মূল্যে পরমাণু উপকরণ উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছিলেন। পারমাণবিক প্রযুক্তি থেকে মিশরকে আটকাতে মো-সা-দ এই কাজ করে ।

৩। ১৯৬৭ সালে মিসরীয় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. সামির নাজিবকে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে হত্যা করে ই-স-রা-ই-লি গোয়েন্দা সংস্থা। পরমাণু প্রযুক্তির সামরিক প্রয়োগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু সফল গবেষণার পর মার্কিন শহর ডেট্রয়টে তাকে হত্যা করা হয়। সেখান থেকে ফিরে মিশরের নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামে কাজ করার কথা ছিল বিজ্ঞানী নাজিবের।

৪। ১৯৮০ সালের ১৪ই জুনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মো-সা-দ মিশনে রহস্যজনকভাবে মারা যান ইরাকের পরমাণু প্রকল্পের প্রধান ড. ইয়াহইয়া আল মাশাদ। ধারণা করা হয়, মো-সা-দ তাকে হত্যা করেছে। ইরাকি পরমাণু চুল্লিতে ফরাসি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য প্যারিসে গিয়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যু ইরাকের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাশাদকে সর্বশেষ দেখেছিলো এক মহিলা, তাকে দু সপ্তাহের মধ্যে গাড়ি এক্সিডেন্টে মেরে ফেলা হয় এবং সে গাড়িটিকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। শেষে উপযুক্ত প্রমাণাদির অভাবে কেইস ক্লোজ হয়ে যায় ।

সেই বছরের শুরুর দিকে আরও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের রহস্যজনকভাবে হত্যা করা হয় ।

৫। ১৯৮৪ সালে ২৮ এ মার্চ ফিলিস্তিনের নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানী নাবিল আহমেদ কে গুম করে হত্যা করা হয়।
যিনি বিদেশের বিভিন্ন অফার প্রত্যাখ্যান করে নিজ দেশের গবেষণায় সাহায্য করতে চেয়েছিলেন ।

৬। ১৯৮৯ সালে ১৪ই জুলাই মাসে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুর্বৃত্ত মিসরীয় বিজ্ঞানী সাইদ আল-বোদায়েরকে তার নিজের বাসভবনে গুলি করে হত্যা করে। মাইক্রোওয়েভ টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছিলেন বোদায়ের।

৭। ১৯৯১ সালে ৩১শে মে একাধিক পুরস্কারপ্রাপ্ত সময়ের অন্যতম এক পদার্থবিজ্ঞানী লেবানিজ রামাল হাসান রামাল প্যারিসে রহস্যজনকভাবে হত্যা করা হয়।

৮। ২০০৪ সালে ইরাকের পরমাণু বিজ্ঞানী ইব্রাহিম আল দাহেরীকে ইরাকের শহর বাকুবায় গুলি করে হত্যা করা হয়।

৯। ২০০৭ সালের ১৫ই জানুয়ারি ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আরদেশির হোসেনপুরকে হত্যা করে মো-সা-দ। মৃত্যুর ছয় দিন পর আল কুদস ডেইলি তার নিহতের খবর প্রচার করে। প্রথম দিকে তিনি গ্যাস বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা সে দেশের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। ওয়াশিংটনের প্রাইভেট গোয়েন্দা সংস্থা স্ট্রাটফোর হোসেনপুরকে মো-সা-দে-র টার্গেট ছিল বলে উল্লেখ করে। অভিযোগ অস্বীকার করে মো-সা-দ।

১০। ২০১০ সালে ১২ই জানুয়ারি ইরানী নিউক্লিয়ার ও পদার্থবিজ্ঞানী বিজ্ঞানী “মাসুদ আলী মুহাম্মাদী” গুপ্তহত্যা করা হয়েছিল তার গাড়িতে বোমা ফিট করে। পদার্থবিজ্ঞানী মাসুদ আলি মোহাম্মদিকে তেহরানে তার বাড়ির বাইরে হত্যা করা হয়। কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে কাজ করছিলেন এই বিজ্ঞানী। একাডেমিক পিয়ার রিভিউড জার্নালগুলোতে তার ৫৩ টি আর্টিকেল রয়েছে। ওই ঘটনার জন্য ই-স-রা-ই-ল ও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে ইরান। তবে ওয়াশিংটন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও, এ নিয়ে কথা বলেনি ই-স-রা-ই-ল।

১১। ২০১২ সালের ১১ই জানুয়ারিতে ৩২ বছর বয়সী মোস্তফা আহমাদি-রোশান ছিলেন পরমাণু বিজ্ঞানী। তেহরানে তার গাড়িতে বোমা স্থাপন করে একজন মোটরসাইক্লিস্ট। ওই বোমার বিস্ফোরণে আহমাদি-রোশান নিহত হন।

১২। ২০১৩ সালে ইরাকের তরুন নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানী মোহাম্মদ আল ফৌজকে বাগদাদে গুলি করে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি পেপারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ব্যাপারে নতুন ফর্মুলা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন।

১৩। ২০১৬ সালে ১৫ই ডিসেম্বর তিউনেশিয়ায় হত্যা করা হয় দেশটির অ্যাভিয়েশন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আল-জাওয়ারিকে। তিনি ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিলেন জাওয়ারি। হামাসের আবাবিল-১ ড্রোন তৈরি করেছিলেন তিনি। নিজ বাসার সামনে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

১৪। শুধু ২০১৮ সালেই কমপক্ষে ৫ জন মুসলিম বিজ্ঞানীকে হত্যা করে মো-সা-দ ।

১৫। ২০১৮ সালে ২১শে এপ্রিল মালয়শিয়ায় কুয়ালালামপুরে কর্মরত রকেট মেকার ফিলিস্তিনি ফাদি মোহাম্মদ আল-বাতসকে হত্যা করে মো-সা-দ। গাজায় তড়িৎ প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনা করার পর মালয়েশিয়ায় একই বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। পাওয়ার সিস্টেম ও পাওয়ার ইলেকট্রনিক্সে ছিলো তার বিশেষ গবেষণা। এসব ক্ষেত্রে তিনি বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর আগে তাঁর এনার্জি বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যাওয়ার কথা ছিল।

১৬। ২০১৮ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি ফিলিস্তিনি প্রকৌশলী ও কানাডায় পিএইচডি ছাত্র হাসান আলি খাইরুদ্দিনকে হত্যা করে মোসাদ। বিশ্ব অর্থনীতিতে ইহুদি আধিপত্য নিয়ে গবেষণা করছিলেন তিনি। সেন্ট ম্যারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকায় হত্যা করা হয় ২৩ বছর বয়সী এই গবেষককে।

১৭। ২০১৮ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সে হত্যা করা হয় লেবাননের নিউক্লিয়ার ফিজিক্স শিক্ষার্থী হিশাম সালিম মুরাদকে। তিনি জোসেফ ফুরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরমাণু পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন।

১৮। ২০১৮ সালের ২৫শে মার্চ দখলকৃত পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনি অত্যন্ত মেধাবী নারী রসায়নবিদ ইমান হোসাম আল-রোজাকে হত্যা করে ই-স-রা-ই-ল।

১৯। ২০১৮ সালের আগষ্টের শুরুতে গাড়ি বোমা হামলায় নিহত হয় সিরিয়ান সায়েন্টিফিক স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ সেন্টারের রকেট বিজ্ঞানী আজিজ আসবর। ঘটনার পর মিডল ইস্ট ইন্টিলিজেন্স এজেন্সিতে খবর আসে এটি মো-সা-দ করেছে ।

২০। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর ইরানের শীর্ষ নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানী মহসিন ফাখরিজাদে কে হত্যা করে মো-সা-দ। তার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই চিন্তিত ছিলো ই-স-রা-ই-ল, এমনকি ই-স-রা-ই-ল-এর প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু ও পর্যন্ত তাকে মার্ক করে রেখেছিলেন। অটোমেটিক রিমোট কন্ট্রোলড মেশিনগান দিয়ে হত্যা করা হয় ফাখরিজাদে কে ।

এখন প্রশ্ন হলো মো-সা-দ কেনো এভাবে বিজ্ঞানীদের গুপ্ত হত্যা করেই চলেছে? বিশেষ করে মুসলিম নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানীরা তাদের টার্গেটে থাকেই। এর উত্তর একটাই, সেটা হলো মুসলিম বিশ্ব, বিশেষ করে আরবরা যেন বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে না পারে এবং কোনভাবেই যেনো পরমাণু শক্তিধর হতে না পারে। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো – “অপারেশন ডেমোক্লিস” ।

অপারেশন ডেমোক্লিসের মাধ্যমে মো-সা-দ একচেটিয়া হামলা শুরু করে বিজ্ঞানীদের উপর। প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই ই-স-রা-ই-ল-এর প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলো মিশর। এবং এক পর্যায়ে মিশরের জন্য প্রযুক্তি ই ছিল একমাত্র উপায়। কিন্তু সেসময় মধ্যপ্রাচ্যে রকেট প্রযুক্তি তেমন ছিল না। তাই মিশর ইউরোপ থেকে এক্সপার্ট ও ম্যাটারিয়েল আনে। ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বাহিনীর রকেট প্রোগ্রামের বিজ্ঞানীদের যারা কিনা ভি-টু রকেটের কাজ করছিল তাদের এবং ফ্রান্সের রকেট প্রোগ্রামে কাজ করা বিজ্ঞানীদের নিয়ে আসে মিশর।

১৯৬২ সালে জুলাইয়ে রকেটের সফল পরীক্ষা চালানোর পর বিশ্বের নজরে চলে আসে মিশর। এরপর কায়রোর রাস্তায় আরো দুটি নতুন রকেট প্রদর্শনী করে মিশর, যা বিশ্বের জন্য ছিল কৌতুহল এবং একটি ধাক্কা। এরপরই মিশরের রকেট প্রযুক্তিতে কাজ করা বিজ্ঞানীদের পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে বিজ্ঞানীদের ইউরোপে ফিরে যেতে চাপ সৃষ্টি করে মো-সা-দ।

সেই বছর ২৭ নভেম্বর রকেট বিজ্ঞানী ওলফগ্যাং পাইলজের অফিসে একটি পার্সেল বোমা পাঠিয়ে বিষ্ফোরণ ঘটানো হয় এতে তার সহকারী আহত হয়। তারপর মিশরের এক রকেট ফ্যাক্টরিতে একই কায়দায় পার্সেল বোমায় নিহত হয় ৫ কর্মী।

মিশরে মিলিটারি হার্ডওয়্যার সরবরাহ করা হেইঞ্জ ক্রুগকে মিউনিখে অপহরণ করে ই-স-রা-ই-লে এনে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে হত্যা করা হয়।

আরও দুজন বিজ্ঞানীর উপর অন্য পন্থায় হামলা চালানো হয় কিন্তু ভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে যান।

এভাবে চলতে থাকায় ১৯৬৩ সালের শেষের দিকে বিজ্ঞানীরা আতংকে মিশর থেকে ফেরত যান। স্থবির হয়ে যায় মিশরের রকেট বিপ্লব।

সুইজারল্যান্ডে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তে এসব যে মো-সা-দ করেছে তা প্রমাণিত হয় এবং মো-সা-দের দুজন এজেন্ট গ্রেফতার হয়। বরাবরের মতই ই-স-রা-ই-ল তা অস্বীকার করে।

কানাডার বিজ্ঞানী গিরাল্ড বুল বিভিন্ন দেশে স্যাটেলাইট গবেষণায় কাজ করতেন। ইরাক স্যাটেলাইট উন্নয়ন প্রোগ্রাম ‘প্রজেক্ট ব্যবিলন’-এর ডিজাইন করলে তাকে ১৯৯০ সালের ২২ মার্চ বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে তার বাড়ির বাইরে গুলি করে হত্যা করে মো-সা-দ।

একইভাবে মিশর, সিরিয়া, ইরান, ইরাক, লেবানন, ফিলিস্তিন সহ আরও কয়েকটি দেশের অসংখ্য বিজ্ঞানীদের হত্যা করে আসছে মো-সা-দ। এবং এসব দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে অমুসলিম বিজ্ঞানী কাজ করলে তাকেও নৃশংসতার শিকার হতে হয়েছে। ফিলিস্তিনের সাদামাটা কোন প্রযুক্তির কর্মীকেও ছাড়ে না ই-স-রা-ই-ল। ই-স-রা-ই-ল-এর নৃশংসতার শিকার সবচেয়ে বেশি হয়েছে ফিলিস্তিনিরা এবং মুসলিম বিশ্ব হারাতে থাকে একের পর এক বিজ্ঞানীদের। স্থবির হয়ে যায় একের পর এক প্রকল্প। মো-সা-দের এই কাজের সাথে প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর। তারাও হামলা করে অনেক বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে।

বিগত অনেক বছর ধরে তাদের প্রধান পরিকল্পনা ইরানকে পরমাণু শক্তিধর দেশ হতে যেকোনোভাবে আটকানো। এবং একের পর এক ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা করার লক্ষ্যে নেমেছে ই-স-রা-ই-ল ।

ইরাকের ৩৫০ এরও বেশি পরমাণুবিজ্ঞানী এবং ৩০০ এর বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে হত্যা করা হয়েছে।

ছবিতে ই-স-রা-ই-ল-এর হামলার পর ফিলিস্তিনের একটি স্কুলের ক্লাসরুম, ফিলিস্তিনের গাজা ইউনিভার্সিটির একটি ভবন এবং রকেট মেকিং এ এক্সপার্ট, এনার্জি বিষয়ক রিসার্চার, তড়িৎ প্রকৌশলী ডক্টর শহীদ ফাদি মোহাম্মদ আল বাতস ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button