চট্টগ্রাম বিভাগ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের আড়াল করছে বিএনপি; রেজাউল করিম 

জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা কাউসার আহমেদ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত নেতাকর্মীদের দল থেকে বহিষ্কার না করে বিএনপি ঘটনা আঁড়াল করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। মঙ্গলবার (১০জুন) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের হলরুমে জেলা জামায়াত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, গতকাল একটি সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি দাবি করেন, “জামায়াত তাদের কথা রাখেনি”। কিন্তু জামায়াত কি কথা রাখেনি তা তিনি পরিষ্কার করেননি। জামায়াত নেতৃবৃন্দের সাথে বিএনপি নেতৃবৃন্দের যে কথা হয়েছে, তা হলো- নিহত কাউসার আহমেদ এর পরিবারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে খুনের সাথে জড়িত ও অভিযুক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তারা হস্তক্ষেপ করবেন না বরং সহযোগীতা করবেন। বিএনপি নেতৃবৃন্দ নিহতের জানাযায় উপস্থিত হয়েও জনসাধারণ মানুষের সামনে সেই ঘোষণাই দিয়েছেন। কিন্তু ঘটনার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দ নিহতের পরিবারের সাথে বা জামায়াত নেতৃবৃন্দের সাথে কোন প্রকার আলোচনা করেননি। অভিযুক্ত খুনীদের দল থেকে বহিষ্কার করেননি বরং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার প্রয়াসে সাংবাদিক সম্মেলনে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে চিহ্নিত খুনীদের পক্ষাবলম্বন করেছেন। এমনকি বলা হচ্ছে ‘ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াত রাজনৈতিক রূপ দিচ্ছে’- বিএনপির এমন দাবির প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

তিনি আরও বলেন, খুনীদের বিচার না হলে সমাজে খুন রাহাজানি বেড়ে যাবে। কোন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই প্রকৃত খুনীদের সঠিক বিচার হউক। খুনীদের পরিচয় খুনীই। কোন খুনীকে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদান করা হলে ন্যায় বিচার বিঘ্নিত হয়।

এ সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে যেন কোন প্রকার চাপে নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরিবর্তন না করা হয় সে দিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের পক্ষ থেকে  মসজিদের ইমাম ও জামায়াত নেতা মাওলানা কাউছার আহমেদ মিলন হত্যার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে খুনীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবী। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এ আর হাফিজ উল্লাহ, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মহসিন কবীর মুরাদ, পৌর আমির এডভোকেট আবুল ফারাহ নিশান, চন্দ্রগঞ্জ থানা জামায়াতের সেক্রেটারী এডভোকেট রেজাউল ইসলাম সুমন প্রমুখ।

উল্লেখ্য ‌‘পূর্ব শত্রুতার জেরে’ হামলায় লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতার মৃত্যুর অভিযোগে বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০ জনকে। রবিবার (৮ জুন) রাতে নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

নিহত কাউছার আহমেদ রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে জামায়াত নেতা কাউছার হামলার শিকার হন। এদিন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। রাতে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়৷ 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button